অধিভুক্তি বাতিল : ঢাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক

অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজকে বাদ দেয়ার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা। সোমবার থেকে এই কর্মসূচি শুরু হবে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবনের তালাও খুলে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

রবিবার বেলা আড়াইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনের মতো রবিবার বেলা ১১টা থেকে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এরপর উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দিতে মিছিল সহকারে শিক্ষার্থীরা তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। তাদের বিক্ষোভের এক পর্যায়ে উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান তাদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন এবং আন্দোলন থেকে সরে আসতে অনুরোধ জানান।

এসময় ভিসি বলেন, অধিভুক্ত অন্য ১০৪টি কলেজকে আমরা যেভাবে বিবেচনা করি এই সাত কলেজকেও আমরা সেভাবেই বিবেচনা করছি। তারা নতুন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবে না। কারণ তারা বিশ্ববিদ্যায়ের আইডি কার্ড পাবে না।

তবে উপাচার্য অধিভুক্তি বাতিলের বিষয়ে কোনো কথা না বলায় শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন এবং মিছিল সহকারে দুপুর দেড়টার দিকে রাজু ভাস্বর্যের সামনে এসে অবস্থান নেন। এসময় তারা টিএসসির আশেপাশের সব রাস্তা বন্ধ করে দেন, যা বেলা আড়াইটা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

এ সময় ‘বাতিল কর অধিভুক্ত, ঢাবি হোক বহিরাগতমুক্ত’, ‘রাখতে ঢাবির সম্মান, অধিভুক্ত বেমানান’, ‘ঢাবি মোদের একটাই, ঢাবির কোনো শাখা নাই’, ‘এক দফা এক দাবি, অধিভুক্ত মুক্ত ঢাবি’ স্লোগানে মুখর করে তুলে রাজু ভাস্কর্য চত্বর।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের কারণে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আমাদের একাডেমিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটছে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাদের ভর্তি কার্যক্রম, সিলেবাস ও প্রশ্ন প্রণয়নে অধিক সময় ব্যয় করছেন।

তারা আরও বলেন, অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজের ঢাবিয়ান বলে পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ক্ষুণ্ন করছে।

কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আপনারা আমাদের দাবি মেনে না নিলে আমরা আরও কঠোর থেকে কঠোরতর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হব।’