অধ্যাপিকা মাহফুজা খুনের নেপথ্যে ‘স্বর্ণালংকার-টাকা লুট’

ইডেন কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী পারভীন হত্যাকাণ্ডের পর গৃহকর্মী রেশমা ও স্বপ্না নিহতের ডায়েরি থেকে তাদের সংরক্ষিত ছবি, লিখিত ঠিকানা ও ফোন নম্বর নিয়ে যায়। অপর গৃহকর্মী রেশমার কোনো তথ্য এখনও কারো কাছে নেই। শুধুমাত্র ভুক্তভোগী নিজেই জানতেন রেশমা কোথা থেকে এসেছেন। তারা কখনও নিজের মোবাইলফোন দিয়ে কারও সঙ্গে যোগাযোগও করতো না।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গৃহকর্মী স্বপ্না ও রেশমা দু’জনই সরাসরি জড়িত ছিলেন। তারা মাহফুজা চৌধুরীকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশের ধারণা, স্বর্ণালংকার ও টাকা লুটের জন্যই পরিকল্পিতভাবে মাহফুজা চৌধুরী পারভীন খুন হয়েছেন। তবে এর পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে তারা।

শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার নিউ মার্কেট থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মাহফুজা চৌধুরী পারভীন খুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে একজন গৃহকর্মী সরবরাহকারী রুনু ওরফে রাকিবের মা এবং অপরজন গৃহকর্মী স্বপ্না ওরফে রিতা আক্তার। হত্যাকাণ্ডের পর তারা ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোনটি নিয়ে যায়।

তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডের পর ঐ বাসায় গৃহকর্মী সরবরাহকারী রুনু ওরফে রাকিবের মাকে মিরপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে সঙ্গে নিয়ে হত্যা মামলার এজহারভুক্ত আসামি স্বপ্না ওরফে রিতা আক্তারকে শুক্রবার ভোরে নেত্রকোনার মদন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তবে এই ঘটনায় অভিযুক্ত অপর গৃহকর্মী রেশমা ওরফে রুমা পলাতক রয়েছে। গ্রেফতারকৃত স্বপ্নার কাছ থেকে একটি স্বর্ণের চেইন ও ৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা হত্যাকাণ্ড যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এই বাসায় কাজ নেয়ার সময় স্বপ্না ও রেশমা ভুয়া ঠিকানা ও পরিচয় দিয়েছিল। তাই স্বপ্নাকে গ্রেফতার করতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে।

মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ঘটনাটি এখনও প্রাথমিক পর্যায় রয়েছে, গ্রেফতারকৃত ২ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অপর গৃহকর্মী রেশমাকে গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।

গৃহকর্মীদের তথ্য সংগ্রহে রাখার অনুরোধ : এদিকে ডিসি মারুফ হোসেন সরদার নগরবাসীকে বাড়িতে কোনো গৃহকর্মী নিয়োগ দিলে তার নাম, পরিচয় ও ঠিকানা রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আপনারা এগুলো যাচাই-বাছাই করে পরিবারের একাধিক ব্যক্তির কাছে রাখবেন এবং সংশ্লিষ্ট থানায় একটি কপি জমা দেবেন। ফলে যদি কেউ অপরাধ করলে তাকে খুঁজে বের করা সম্ভব হবে।