অভিনয়ের জন্য সরকারকে অস্কার দেয়া উচিৎ : ড. কামাল

ঐক্যফ্রন্টের প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ২০১৪ সালে হওয়া নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে আদালতে আমাকে ডাকা হয়েছিল। সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য তারা ৫ জানুয়ারির নির্বাচন দিয়েছে। দ্রুত সব দলকে নিয়ে তারা আরেকটি নির্বাচন দেবে। কিন্তু সেই দ্রুত শব্দটির অর্থ এতদিনে বুঝতে পারলাম না। দ্রুত শব্দটা ডিকশনারিতে নতুন করে ঢুকানো দরকার যে দ্রুত শব্দ বলতে কত দ্রুত বোঝানো হয়। ৫ বছর?

সোমবার দুপুরে রাজধানীর পূর্বাণী হোটেলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার ঘোষণা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ড. কামাল।

বিএনপির বর্জন করা ওই নির্বাচন সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সাল থেকে সরকার দিচ্ছি দিচ্ছি বলে পাঁচ বছর কাটিয়েছে। এই সরকারকে অভিনয়ের জন্য অস্কার দেয়া উচিত। কারণ তারা এই দিচ্ছি এই দিচ্ছি অভিনয় করে পাঁচ বছর কাটিয়ে দিয়েছে।

২০১৪ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ রাষ্ট্রের মালিকানা হারিয়েছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, জনগণকে হাড়ে হাড়ে এর মাশুল দিতে হচ্ছে। এই বছরগুলোতে অর্থনীতি নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া এই সরকারের আমলে সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি। ব্যাংকের কথাতো বলবোই না, তাহলে রাষ্ট্রের ওপর মানুষ আস্থা হারাবে।

তিনি আরও বলেন, আমি সবসময় পুলিশকে নিয়ে গর্ব করেছি, পুলিশকে এই পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হবে কখনো ভাবিনি। সংলাপের শেষ দিন আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে একটি আশ্বাস পেয়েছিলাম যে আর অ্যারেস্ট হবে না। তবে এরপর থেকে শুধু অ্যারেস্ট, অ্যারেস্ট আর অ্যারেস্ট। অ্যারেস্ট কোনোভাবেই বন্ধ হচ্ছে না। তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত ১৯০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের নাম ও স্থানের তালিকা আমাদের কাছে রয়েছে। এটি একটি জাতীয় লজ্জার বিষয়। এটা শুনে আমাদের ১৬-১৭ কোটি মানুষ লজ্জা পাবে। যে স্বাধীনতার জন্য এতো মানুষ প্রাণ দিয়েছে, বঙ্গবন্ধু প্রাণ দিয়েছে, সেই স্বাধীন দেশে ৪৭ বছর পরেও জনগণকে এইভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, আমি পুলিশ বাহিনীকে অনুরোধ করি, আবেদন করি, তাদের যেকোনোভাবে বোঝানোর চেষ্টা করি, এগুলো আপনারা করবেন না। পুলিশ একাডেমিতে বক্তব্যে আমি অনেকবার বলেছি এখনও বলছি আপনারা কোনো বেআইনি হুকুম মানবেন না। বেআইনি আদেশ মানা অপরাধ। পুলিশ বাহিনীকে এলোপাথারি গ্রেফতার করা থেকে সরে আসতে হবে, বিশেষ করে নির্বাচনের ১২-১৩ দিন আগে। সরকারের উচিৎ জনগণ যেভাবে দেশে পরিবর্তন আনতে চায় সেভাবে হতে দেয়া। তা না হলে আমি সতর্ক করে দিতে চাই, দেশের অবস্থা ভয়াবহের দিকে মোড় নিতে পারে যা কারোরই কাম্য নয়।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মতো আমরাও বলতে চাই এই রাষ্ট্রের মেরামত প্রয়োজন। আমি চাই ৩০ ডিসেম্বর আপনারা দলে দলে জনে জনে ভোটকেন্দ্রে যাবেন ভোট দেবেন অনিয়ম রুখবেন।