‘অভ্যন্তরীণ রাস্তার বেহাল দশা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে’

ইমদাদুল হক মিরন : প্রতিষ্ঠার পর এক যুগ পেরিয়ে গেলেও এখনও নানা সীমাবদ্ধতায় আবদ্ধ দেশের ২৬তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)। একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যে ন্যুনতম মান বজায় থাকার কথা, অনেক ক্ষেত্রে সেটিও থাকছে না স্বয়ং ক্যাম্পাস অভ্যন্তরেই। আর সেই নমুনার একটি নিদর্শন হচ্ছে ক্যাম্পাস অভ্যন্তরীণ রাস্তার বেহাল দশা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রাস্তায় বেশ কয়েকটি জায়গা ভাঙাচোরা ও খানাখন্দে ভরা। কোথাও ইট সরে গেছে, কোথাও উঠে গেছে খোয়া, আবার অবহেলার প্রতীক হয়ে কোথাও তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির মৌসুম হওয়ায় এসব গর্তে জমে থাকে পানি। যাতে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ, বাড়ছে মশার প্রাদুর্ভাব। শুষ্ক আবহাওয়ায় ভাঙাচোরা রাস্তা থেকে উড়ছে ধুলো। তাতে সর্দি, শ্বাসকষ্টসহ নানাবিধ অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে তিনটি একাডেমিক ভবনে যাওয়ার ইট বিছানো রাস্তায় ইটগুলো সজ্জিত রয়েছে এবড়োথেবড়োভাবে। ফলে অনেক সময়ই হোঁচট খেতে হয়। প্রতিদিন এই উঁচুনিচু রাস্তায় চলাচলকারী পাঁচ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীদের ক্যাফেটেরিয়া এবং আবাসিক হলগুলোতে গমনের রাস্তার অবস্থাও নাজুক। ক্যাফেটেরিয়ার পাশ দিয়ে যাওয়া রাস্তা ব্যবহারের এতই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে যে যাতায়াতের সময় রাস্তার নির্ধারিত অংশটুকু এড়িয়ে চলেন শিক্ষার্থীরা। শহীদ মিনারে যাওয়ার রাস্তার দুই পাশ অনেকটাই দেবে গেছে এবং জায়গায় জায়গায় ইট উঠে গেছে। অল্প বৃষ্টিতেই এসব রাস্তায় পানি জমে থাকে। ফলে অসাবধানতাবশত অনেক শিক্ষার্থীই পা পিছলে পড়ে গিয়ে ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা।

নিজস্ব ক্যাম্পাসের ভেতরে রাস্তার এমন বেহাল দশায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন আসিফ বলেন, ‘ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে আমরা ঠিকমতো হাঁটতেও পারি না। প্যান্টে ময়লা লাগে, কাদা লাগে। বৃষ্টি হলে রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। রাস্তার বেহাল দশার কারণে ক্যাম্পাস অভ্যন্তরেই আমাদের চলাফেরা যেন শিথিল হয়ে পড়েছে।’

শুধু যে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ সড়কের অবস্থাই নাজুক, এমন নয়। পরিকল্পনা ও যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে চলাচলের বেশিরভাগ জায়গাই হয়ে পড়েছে চলাচল অনুপযোগী। বাস পার্কিংয়ের জায়গায় সবসময়ই ধুলো ও কাদা জমে থাকে। এতে বাসে উঠতে গিয়েও বিপত্তির শিকার হন অনেক শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, প্রশাসন উদাসীন থাকায়ই দীর্ঘদিন ধরে এভাবে পড়ে আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ রাস্তাঘাট।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর এবং ডেসপাস শাখায় মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।