অল্প পুঁজিতেও দারুণ জয় পেলো বাংলাদেশ

লক্ষ্য মাত্র ২০৪ রান। চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্বাগতিক স্পিনারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে দলীয় মাত্র ১১ রানেই চার ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বসে। সে অবস্থা থেকে আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি ক্যারিবীয় দলটি। ৬৪ রানের ব্যবধানে হেরেই মাঠ ছড়াতে হয়েছে অতিথি দলটিকে।

শনিবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের তৃতীয় দিনে ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে মাত্র ১৩৯ রানে দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তাইজুল ইসলাম ও সাকিব আল হাসানের বোলিং তোপেই উড়ে যায় ক্যারিবীয় দলটির ব্যাটিং লাইন।

তাইজুল ১১.২ ওভারে মাত্র ৩৩ রান খরচায় ছয় উইকেট নেন। আর সাকিব ও মিরাজ পান দুটি করে উইকেট। অবশ্য এই ম্যাচে সাকিব দারুণ একটি কীর্তি গড়েছেন। টেস্টে ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২০০ উইকেট ও তিন হাজার রান নিয়েছেন।

এদিকে ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ৩২৪ রান করেছিল বাংলাদেশ। জবাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ করে ২৪৬ রান। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিকরা ৭৮ রানে লিড পেয়েছিল। দ্বিতীয় ইনিংসে সাকিবরা মাত্র ১২৫ রান করলে প্রতিপক্ষের সামনে দুই শতাধিক রানের লক্ষ্য ছুড়ে দেওয়া সম্ভব হয়।

অবশ্য দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাও আত্মহত্যার মিছিলে অংশ নিয়েছিল। ইমরুল কায়েস (২), সৌম্য সরকার (১১), মুমিনুল হক (১২), মোহাম্মদ মিঠুন (১৭) ও সাকিব আল হাসান (১) আগেরদিনই সাজঘরে ফিরেন। মাহমুদউল্লাহ ছাড়া সবাই আসা-যাওয়ায় ব্যস্ত ছিলেন। এই ইনিংসে তিনি সর্বোচ্চ ৩১ রান করেন।

এর আগে অভিষিক্ত স্পিনার নাঈম হাসানের বোলিং তোপে ক্যারিবীয় দলটির প্রথম ইনিংস ২৪৬ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল। তিনি একাই পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে ইতিহাস গড়েন। এ ছাড়া সাকিব আল হাসান তিনটি এবং তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজ একটি করে উইকেট পান।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটসম্যানদের হয়ে শিমরন হেটমায়ার (৬৩) ও শেন ডাওরিচ (৬৩) ছাড়া কেউই দৃঢ়তা দেখানে পারেননি। অন্যরা একরকম আসা-যাওয়ায় ব্যস্ত ছিলেন।

আর মুমিনুল হকের চমৎকার সেঞ্চুরির পোপর ভর করে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৩২৪ রান করে। যদিও শুরুটা ভালো হয়নি। ম্যাচের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে সাজঘরে ফিরে যান ওপেনার সৌম্য সরকার (০)। বেশ কিছুদিন পর ফিরে দলের শুরুটা ভালো এনে দিতে পারেননি এই বাঁহাতি ওপেনার। আরেক ওপেনার ইমরুল ফেরেন ৪৪ রান করে। বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি মোহাম্মদ মিঠুনও (২০)।

পরে মুমিনুল ক্যারিয়ারের অষ্টম সেঞ্চুরি করে দলকে বড় সংগ্রহের পথ দেখিয়ে ছিলেন। খেলেন ১২০ রানের চমৎকার একটি ইনিংস। এই সেঞ্চুরি করে তিনি ছুঁয়ে ফেললেন তামিম ইকবালকে। দুজনেরই এখন আটটি করে টেস্ট শতক।

তবে একটি জায়গায় এগিয়ে মুমিনুল। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ছয়টি সেঞ্চুরি করেন তিনি। যেখানে তামিমের একটি।

তবে মুমিনুল সাজঘরে ফেরার পরই বাংলাদেশের বড় সংগ্রহের আশা শেষ হয়ে যায়। এরপর পরই অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম (৪) দ্রুত ফিরে গেলে কিছুটা চাপে পড়ে যায় দল।তাঁর পথ ধরে দ্রুত ফিরে যান মাহমুদউল্লাহও (৩)।

তখনো ভরসা ছিল সাকিব পিচে আছেন। কিন্তু তিনিও ৬৮বলে ৩৪ রানের একটি ইনিংস খেলে আউট হলে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে দল।

তবে নবম উইকেটে তাইজুল ইসলামও অভিষিক্ত নাঈম হাসান দারুণ দুটি ইনিংস খেলে বুঝিয়ে দিয়েছেন, এই ইনিংসেও ভালো কিছু করা সম্ভব। তাইজুল ৩৯ রানে অপরাজিত থাকলেও নাঈম ২৬ রান করে আউট হন।