আইসিইউতে ভর্তি রোগীকে ধর্ষণচেষ্টা, বিপাকে দুই নার্স

আইসিইউতে ভর্তি থাকা ১৬ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে বেসরকারি একটি হাসপাতালের পুরুষ দু’জন নার্স। এ ঘটনায় উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া কিশোরীর মা পুলিশের কাছে অভিযোগ করার পর অভিযুক্ত দু’জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে।

হয়রানির শিকার কিশোরীর মায়ের দাবি, ২৩ ও ২৭ বছর বয়সী ওই দু’জন অভিযুক্ত তার মেয়ের স্পর্শকাতর জায়গা আচমকা স্পর্শ করেন। এতে হতবাক হয়ে যায় কিশোরী।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, অভিযুক্ত নার্সদের একজন তার মেয়েকে হুমকি দিয়েছে, ধর্ষণে বাধা দিলে তার অক্সিজেনের লাইন খুলে দেয়া হবে। গত ১৬ নভেম্বর রাতে শিবা হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে তার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি।

গুরুগাঁওয়ের পূর্ব রাজিব নগর এলাকার ওই হাসপাতালে একরাত কাটিয়ে মেয়েকে নিয়ে চলে যান তার মা। ভুলবশত কোমল পানীয় ভেবে বিষ খেয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ১৬ বছরের কিশোরী।

গত রোববার এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হয়। গ্রেফতারের পর সোমবার তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। শিবা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিযুক্ত নার্সদের চাকরিচ্যুত করেছে তারা। তার পরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পুলিশের তদন্তের আওতাধীন রয়েছে।

তবে অভিযোগ নেয়ার ব্যাপারে পুলিশেরও গাফিলতি রয়েছে। যৌন হয়রানির অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৫৪ নম্বর ধারায় নার্সদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নেয়া হয়নি। বিষের মাধ্যমে আহত করার অভিযোগে ৩২৮ নম্বর ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে।

এছাড়া ৫০৬ নম্বর ধারা ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগ তোলা হয়েছে। অন্যদিকে ১৬ নভেম্বরই ওই কিশোরীকে সিভিল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তবে গুরুতর অসুস্থ কিশোরীর পাশে পরিবারের কেউ থাকতে নার্সরা কীভাবে এমন কাজ করতে পারে সে ব্যাপারেও প্রশ্ন উঠেছে। কিশোরীর মায়ের দাবি, আইসিইউতে মেয়েকে ভর্তি করে স্বামীর সঙ্গে বাড়ি ফিরে যান তিনি। সেই সুযোগে তাদের মেয়ের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে রবিন্দর এবং কুলদ্বীপ।

তিনি আরও জানান, তার মেয়ের গায়ে আচমকা হাত দেয় কুলদ্বীপ। কুলদ্বীপকে বাধা দিলে সে অক্সিজেনের সংযোগ খুলে দেয়ার হুমকি দেয়। এরপর মেয়ে চিৎকার শুরু করলে কুলদ্বীপ তার মুখ চেপে ধরে।

রাতের বেলা দ্বিতীয়বার তার মেয়ের কাছে আসে কুলদ্বীপ। জোরপূর্বক তখন কিশোরীকে চুম্বন করে সে। পরে ধর্ষণেরও চেষ্টা করে কুলদ্বীপ। পরের দিন সকালেই বাবা-মার সঙ্গে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যায় কিশোরী।

কিশোরীর মায়ের দাবি, তাদের মেয়ে সেই বিভৎস ঘটনার কথা কিছুতেই ভুলতে পারছে না। পরে নার্সরা তাদের মেয়ের মোবাইলে কল দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে।

১৪ নম্বর সেক্টরের পুলিশ স্টেশনের ইন্সপেক্টর জানান, এটা বড় ধরনের একটা ঘটনা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না। আমরা সেখান থেকে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করবো। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া