আওয়ামী লীগের ভূয়সী প্রশংসায় ইসি সচিব

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, ‘আপনাদের মনোনয়ন (সংরক্ষিত নারী আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের) যেহেতু প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন, সেটাকে সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করে আপনাদের মনোনয়নপত্র আমরা বাছাই করব। বড় ধরনের, গুরুতর কোনো ফল্ট (ত্রুটি) না থাকলে ইনশাল্লাহ, রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অনুরোধ করব, বাছাই পর্বে আপনারা যাতে উত্তীর্ণ হতে পারেন।’

মঙ্গলবার (১২ ফেব্রুয়ারি) একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থীদের মনোনয়ন বাছাইয়ের শুরুতে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এসব কথা বলেন।

মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে আগত প্রার্থীদের ইসি কর্মকর্তার বাইরে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সহযোগিতা নিতে বলেন হেলালুদ্দীন আহমদ। এ সময় আওয়ামী লীগের ভূয়সী প্রশংসাও করেন গণপ্রজাতন্ত্রের এ কর্মকর্তা।

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে আপনাদের অভিনন্দন জানাই যে, প্রাথমিকভাবে আপনারা সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচিত হয়েছেন। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় আপনাদের অংশগ্রহণ ও নারীদের উন্নয়নের বিকল্প নাই। সে হিসেবে আমাদের প্রধানমন্ত্রী নারীর উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় যেভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, এটাই তার একটি প্রতিফলন।’

তিনি বলেন, ‘এবারের মনোনয়নে আমরা দেখতে পাচ্ছি, আমাদের প্রধানমন্ত্রী আপনাদের খুঁজে খুঁজে বের করে নিয়ে আসছেন। আপনাদের সেভাবে মনোনয়ন দিয়েছেন।’

আওয়ামী লীগ মনোনীতদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার বিষয়ে ইসি সচিব বলেন, ‘গতকাল আমাদের সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এসেছিলেন। উনি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এটা আনুষ্ঠানিকভাবে হ্যান্ডওভার (হস্তান্তর) করেছেন। আমরা খুব খুশি হয়েছি, আপনারা এসেছিলেন, সবাই জমা দিয়েছেন।’

কানিজ ফাতেমার কথা আওয়ামী লীগ ভুলতে পারবে না উল্লেখ করে হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘আমি ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ছিলাম। রোশনা ইমাম, উনার কথা অনেক মনে পড়ে। অত্যন্ত বয়োজ্যেষ্ঠ নেত্রী। উনি আমাদের যথেষ্ঠ সহযোগিতা করেছিলেন তখন। আর আমার নিজ জেলা কক্সবাজার, কানিজ ফাতেমা; উনার অবদানের কথা তো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং কক্সবাজারের মানুষ কখনো ভুলতে পারবে না।’

প্রার্থীদের আওয়ামী লীগ নেতার সহযোগিতা নেয়ার কথা উল্লেখ করে সচিব বলেন, ‘আমি এ পর্যায়ে আপনাদের আবারও অভিনন্দন জানাচ্ছি। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে আনুষ্ঠানিক দুই-একটি কথা বলে যাচাই-বাছাই করার অনুরোধ জানাচ্ছি। আপনাদের যদি বেশি প্রয়োজন হয়, আমাদের কাওছার ভাই আছে, অ্যাডভোকেট কাওছার, কাযনির্বাহী পরিষদের সদস্য। এবং আমাদের এখানে বাবলা ভাই আছেন। উনারা আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা করবেন। কোথাও কোনো ত্রুটি হলে আমরা এগুলো প্রাথমিকভাবে সমাধান করার চেষ্টা করব।’

হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে আমরা স্বাগত জানাই। সংবিধান মোতাবেক ২০০ আসনের বিপরীতে ৫০টি সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্যের বিধান রয়েছে। সেই হিসাবে আমরা তফসিল ঘোষণা করেছি নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আপনারা প্রাথমিকভাবে মনোনীত হয়েই গতকাল আপনারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আজকে তার বাছাই পর্ব।’

একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনীত ৪৩ জন, জাতীয় পার্টির চারজন, ওয়ার্কার্স পার্টির একজন এবং স্বতন্ত্র একজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। সোমবার শেষ দিনে সংরক্ষিত ৫০টি আসনের মধ্যে ৪৯টির জন্য ৪৯টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে।

একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন-২০১৯ এর মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ছিল ১১ ফেব্রুয়ারি। ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শুরু হয়। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৬ ফেব্রুয়ারি। ৪ মার্চ নির্বাচন ভবনে ভোটগ্রহণ হবে।