আধা কিলোমিটার হেঁটে হেলিকপ্টারে চড়লেন প্রধানমন্ত্রী

গাড়িতে না চেপে হেলিপ্যাড পর্যন্ত রাস্তাটুকু পায়েই হেঁটে গিয়ে হেলিকপ্টারে চড়লেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

টুঙ্গীপাড়ায় তার পৈত্রিক নিবাস থেকে উপজেলা কমপ্লেক্স চত্বরে রাখা হেলিকপ্টার পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা পায়ে হেঁটেই পাড়ি দেন তিনি। ছোট বোন শেখ রেহানাও এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন। খবর: বাসস

বুধবার বিকেলে রাজধানীতে ফেরার পথে প্রধানমন্ত্রীর হেলিপ্যাড পর্যন্ত এই আকস্মিক হেঁটে যাওয়া দেখে তার নিরাপত্তা রক্ষী, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষ যারপরনাই বিস্মিত হন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মস্থল এবং তার প্রৈত্রিক নিবাস টুঙ্গীপাড়ায় এলে শেখ হাসিনা যেন শৈশবের সোনাঝরা দিনগুলোর মাঝে হারিয়ে যেতে চান।

প্রটোকল আর বিধি-নিষেধের বেড়াজালটি যেন বার বারই ছিন্ন করে জনগণের নেত্রী মিশে যেতে চান জনতার কাতারে। আর সে কারণেই এখানে এসে এর আগে নাতি-পুতিদের নিয়ে রিকশা ভ্যানেও চড়েছিলেন বিশ্ব মানবতার জননী উপাধিতে ভূষিত বঙ্গবন্ধু কন্যা।

বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ কমপ্লেক্স থেকে বের হয়েই তার সঙ্গে থাকা সরকারি কর্মকর্তা এবং নিরাপত্তায় নিয়েজিতদের উদ্দেশ্যে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘এখানে গাড়ির কোন প্রয়োজন নেই এইটুকু পথতো হেঁটেই যাওয়া যায়।’ শেখ রেহানাকে নিয়ে ততক্ষণে হাঁটা ধরেছেন তিনি। অগত্যা বিস্ময়ের ঘোর কাটতে না কাটতেই সকলকে তার পিছু নিতে হলো। অথচ গত সেপ্টেম্বরেই কি না ৭২ বছরে পদার্পণ করেছন প্রধানমন্ত্রী।

এদিন সকালেই জাতির পিতার সমাধিসৌধে কবর জিয়ারতে নবগঠিত মন্ত্রিসভার সদস্য এবং সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে টুঙ্গীপাড়া এসেছিলেন শেখ হাসিনা।

তিনি জাতির পিতার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ছাড়াও, ফাতেহা পাঠ করে বিশেষ মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন এবং ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধির পাশে বসে কোরআন তেলাওয়াত করেন।

নবগঠিত মন্ত্রিসভার সদস্যরা, যারা এদিন জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আসেন তারাও এসেছিলেন পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, বাসে চড়ে। নিজস্ব পতাকা শোভিত জমকালো গাড়ি নিয়ে নয়।

উল্লেখ্য, গত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের বিপুল বিজয়ের পর গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটানা তৃতীয় বার এবং মোট চতুর্থবারের মত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এবং তাঁর নবগঠিত ৪৭ সদস্যের মন্ত্রিসভা শপথ গ্রহণ করেন।

বঙ্গভবনের দরবার হলে অনুষ্ঠিত এক রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এবং নতুন মন্ত্রিসভায় ২৪ জন মন্ত্রী, ১৯ জন প্রতিমন্ত্রী এবং ৩ জন উপমন্ত্রী শপথ গ্রহণ করেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ এই শপথ বাক্য পাঠ করান।