আপিল বিভাগে নতুন বিচারপতির প্রয়োজন নেই, মত আইনমন্ত্রীর

বিচারপতি অপসারণ-সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে সর্বোচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছিলেন, তা পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এই রিভিউর শুনানি করতে আপিল বিভাগে নতুন বিচারপতি নিয়োগ করতে হবে কি না, সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

তবে এই শুনানির জন্য আপিল বিভাগে নতুন বিচারপতি নিয়োগের প্রয়োজন দেখছেন না আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি মনে করেন, মামলাটির আপিল শুনানিতে থাকা যে পাঁচজন বিচারপতি বর্তমানে আপিল বিভাগে আছেন, তাঁরাই শুনানি করতে পারবেন।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সরকারি আইন কর্মকর্তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ব্ক্তব্য দেওয়া শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘যতদূর সম্ভব যেই বেঞ্চ এটা শুনানি করেছিল, সে বেঞ্চই এটার শুনানি করবে। সে ক্ষেত্রে আমার মনে হয় না যে নতুন করে অ্যাপয়েনমেন্ট নেওয়ার প্রয়োজন আছে এ মামলার এই রিভিউ পিটিশন শুনানি করার জন্য।’

তবে এর আগে রিভিউ আবেদন দায়ের করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছিলেন, মামলাটির শুনানিতে সাতজন বা তার বেশি বিচারক প্রয়োজন হবে।

এ ছাড়া নিম্ন আদালতের বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধির মাধ্যমে অধস্তন আদালত অধীনে নিয়ে সরকার উচ্চ আদালতও অধীনে নেওয়ার উদ্দেশ্যে ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউর আবেদন করেছে বলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির করা অভিযোগ নাকচ করে দেন আইনমন্ত্রী।

এ প্রসঙ্গে বিএনপির সমালোচনার জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘উনারা তো পকেটে নিয়ে রেখেছিলেন। সেটার থেকে আস্তে আস্তে আমরা বের করে আজকে বিচার বিভাগকে একটা মর্যাদার আসনে বসাচ্ছি। সে জন্যই উনাদের এত গাত্রদাহ।’

গত ১ আগস্ট বিচারপতিদের অপসারণ-সংক্রান্ত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এর আগে ৩ জুলাই বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে আনা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীকে অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।

সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের সংশোধনীতে, যা ষোড়শ সংশোধনী নামে পরিচিত, সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ন্যস্ত করা হয়। এর আগে এ ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলে ছিল।