আমরা আর ২০ দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকব না : মওদুদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, এমন একটা সময় আসবে যখন এই সরকার বুঝতে পারবে যে, তাদের আর ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নেই। তাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারি না। তবে আর কিছুদিন অপেক্ষা করুন। ধৈর্য ধরুন। তিনি বলেন, উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত কর্মসূচি দেয়া হবে। সেই কর্মসূচি কঠোর কর্মসূচি হবে। এটা কোনো নরম কর্মসূচি হবে না।

তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী আজ কারাগারে। তার জামিন নিয়ে টালবাহানা করছে সরকার। জামিন বিলম্বিত করার জন্য দেরি করে তারিখ দিচ্ছে। তিনি বলেন, যতই বিলম্বিত করুন। জামিন হবে। এটা মানুষের মৌলিক অধিকার। যেদিন খালেদা জিয়া বের হবেন সেদিন কি হবে সেই ভয়ে ভীত সরকার। সরকার জানে খালেদা জিয়া বের হলে কি হবে। তিনি বের হলে আমরা আর ২০ দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকব না। দেশের যত গণতান্ত্রিক শক্তি আছে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।’

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরাম আয়োজিত ‘বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ড ও মৌলিক অধিকার শীর্ষক’ গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। মাদকবিরোধী অভিযানে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচার ভবিষ্যতে হবে উল্লেখ করে মওদুদ আহমদ বলেন, সঠিক তালিকা ধরে মাদক চোরকারবারিদের না ধরে চুনোপুঁটিদেরকে বিনা বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। আগামীতে বিনা বিচারের এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘মাদক নিয়ন্ত্রণের নামে দেশে যে হত্যাকাণ্ড পরিচালনা হচ্ছে তার অধিকার কে দিয়েছে? বিনা বিচারে এমন হত্যাকাণ্ড কোন আইনে করা হচ্ছে? কে মাদক ব্যবসায়ী, কে মাদক সম্রাট তার তালিকা করলো কারা? বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘মাদকের বিস্তারের জন্য দায়ী সরকার নিজেই। গত দশ বছর ধরে তারা ক্ষমতায়, এতদিন কি কোনো উদ্যোগ ছিল মাদক নিয়ন্ত্রণের? যদি থাকতো তাহলে আজ এভাবে মাদক নিয়ন্ত্রণের নামে অভিযান পরিচালনা করতে হতো না। নির্বিচারে মানুষ হত্যা করে আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে সরকার। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের জন্য তাদেরকেও বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।’

তিনি বলেন, ব্যাংকে যে অস্থিরতা তা নিয়ন্ত্রণের কোনো পদক্ষেপ নেই সরকারের। নানাভাবে নানা কৌশলে ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎ করছে দুর্নীতিবাজরা। কিন্তু তা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সরকার। লুটেরা লুটপাট করে খাচ্ছে। ব্যাংকিং কমিশন গঠনের ছিটেফোঁটাও বাজেটে উল্লেখ নেই। কর্মসংস্থানের সৃষ্টির ওপর কোনো গুরুত্ব দেয়া হয়নি বাজেটে। ধনীকে ধনী করবে এই বাজেট, গরিবকে আরও গরিব করবে। এই বাজেট প্রশ্নবিদ্ধ।

২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, হলমার্ক থেকে শুরু করে ব্যাংকগুলোতে লুট শুরু হয়েছে। এখন ব্যাংকে তারল্য সংকট চলছে। আমরা দেখেছি সরকারের পক্ষ থেকে টাকা দিয়ে ব্যাংক বেঁচে রাখা হচ্ছে। আজকে ব্যাংক খাত চরম সংকটে রয়েছে। অথচ ব্যাংকিং কমিশন গঠন করার ব্যাপারে বাজেটে কোনো নির্দেশনা নেই। জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটেনি। ব্যাংকের মালিককে সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। সাধারণ দরিদ্র্র মানুষের জন্য কিছু রাখা হয়নি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী আজ কারাগারে। তার জামিন নিয়ে টালবাহানা করছে সরকার। জামিন বিলম্বিত করার জন্য দেরি করে তারিখ দিচ্ছে। তিনি বলেন, যতই বিলম্বিত করুন। জামিন হবে। এটা মানুষের মৌলিক অধিকার। যেদিন খালেদা জিয়া বের হবেন সেদিন কি হবে সেই ভয়ে ভীত সরকার। সরকার জানে খালেদা জিয়া বের হলে কি হবে। তিনি বের হলে আমরা আর ২০ দলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকব না। দেশের যত গণতান্ত্রিক শক্তি আছে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে।

নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উপদেষ্টা হাজী মো. মাসুক মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ওলামা দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শাহ মো. নেসারুল হক, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি ফরিদ উদ্দিন প্রমুখ বক্তৃতা করেন।