‘আমার মৃত্যুর জন্য সহকারী জজ সুমন মিয়া দায়ী’

কিশোরগঞ্জে চিরকুট লিখে ফৌজিয়া খানম অন্তু (২৩) নামে এক তরুণী আত্মহত্যা করেছেন। মৃত্যুর আগে লিখে রেখে যাওয়া চিরকুটে সুমন মিয়া নামে এক সহকারী জজকে দায়ী করেছেন তিনি। এ নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে।

শুক্রবার শহরের রাকুয়াইল শিক্ষক পল্লী এলাকায় নিজ বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন ফৌজিয়া।

পুলিশ ফৌজিয়ার মোবাইল ফোন ও চিরকুটটি জব্দ করেছে। এ ছাড়া তার মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে।

ফৌজিয়া খানম অন্তু কুয়েত প্রবাসী ফরিদ উদ্দিন খানের মেয়ে। তিনি সরকারি গুরুদয়াল কলেজে ভূগোল বিভাগ থেকে মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে ফৌজিয়া সুলতানা অন্তু সবার বড়।

চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য সহকারী জজ সুমন মিয়া (গাইবান্ধা) দায়ী। সে আমার সব কিছু জেনেও আমাকে স্বপ্ন দেখাইছে। আমার সাথে অনেক দূর পর্যন্ত আসছে। এখন আমি তার যোগ্য না খারাপ মেয়ে বলে ছেড়ে দিল। বাট খাইরুল ইসলাম (ভূগোল পরিবেশ) মাস্টার্স আমার ক্লাসমেট, তার সাথে আমার এক সময় একটা এফেয়ার ছিল। তারে আমি হেল্প করতে গিয়ে নিজের ইমেজ নষ্ট করল। সব সময় হেল্প করেছি। আর সে আমার নামে এতো খারাপ খারাপ ছড়ায়। আর খাইরুল চিনে এই ছেলেকে। সে আমার নামে অনেক মিথ্যা কথা বলেছে। কোন দিন তার সাথে এফেয়ার ছিল না। তারপরও এমন কথা বলছে, যা মুখে বলাও পাপ।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমার আম্মা তোমারে অনেক জ্বালিয়েছি ছোটবেলা থেকে। তুমি পারলে আমাকে ক্ষমা করো। অন্তু’

চিরকুটের নিচে আরও লেখা ছিল, ‘আমার লাশটি কাটাছেঁড়া করতে দিও না।’

অন্তুর স্বজনরা জানান, শুক্রবার দুপুরে তার মা সুলতানা খানম ছোট দুই মেয়ে ও ছোট ছেলেকে নিয়ে শহরের গাইটাল এলাকার অতিথি কমিউনিটি সেন্টারে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যান। অনেক বলেও বড় মেয়ে অন্তুকে তিনি বিয়ের অনুষ্ঠানে নিয়ে যেতে পারেননি। মেয়ের কথামতোই বাইরে থেকে বাসায় তালা দিয়ে অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তারা। বিকেলে বাসায় ফিরে ফ্যানের সঙ্গে মেয়ের নিথর দেহ ঝুলতে দেখেন সুলতানা বেগম। পাশেই পড়ে ছিল পেন্সিল দিয়ে ডায়রির পাতা ছিঁড়ে লেখা একটি চিরকুট।

তবে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে চিরকুটে উল্লেখ করা সহকারী জজ সুমন মিয়া (গাইবান্ধা) সম্পর্কে তেমন নির্দিষ্ট কিছু জানা যায়নি। এছাড়া সহপাঠী খাইরুল ইসলাম সম্পর্কেও সুনির্দিষ্ট কিছু তারা জানাতে পারেননি।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আহসান হাবীব জানান, তদন্তের জন্য তারা নিহত ফৌজিয়ার সুইসাইড নোট এবং তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি জব্দ করেছেন। তবে এখনও পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার অভিযোগ পাননি বলেও জানান তিনি।