আমি হতভম্ব হয়ে ওদের পেছনে হাঁটতে থাকি : মিন্নি

বরগুনায় স্ত্রীর সামনে স্বামী রিফাত শরীফকে হত্যার ঘটনায় নতুন করে ফের আলোচনায় এসেছেন আয়েশা আক্তার মিন্নি। ঘটনার দিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে যাওয়া মুঠোফোনে ধারণ করা ভিডিওতে স্বামীকে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে বাঁচাতে প্রাণপণ লড়াই করতে দেখা যায়। এরপরই আলোচনায় চলে আসেন মিন্নি।

রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মিন্নি এক নম্বর সাক্ষী। ঘটনার পরপরই তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাড়িতে পুলিশি পাহারা বসানো হয়েছে। শুক্রবার (৫ জুলাই) থেকে ১০ সদস্যের অস্থায়ী পুলিশ চৌকি বসানো হয়েছে।

সবশেষে গত শনিবার (৬ জুলাই) সিসিটিভি ক্যামেরায় ধারণকৃত রিফাত হত্যার দুটি ফুটেজ গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাকে নিয়ে শুরু হয় নতুন সমালোচনা।

এদিকে নতুন প্রকাশিত ভিডিওটি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন মিন্নি।

মঙ্গলবার নিজ বাড়িতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘তখন সোয়া ১০টা হয়তো, রিফাত আমাকে বলে, আব্বু আসছেন, চলো তোমার সাথে দেখা করবে। আমি ওরে বলছিলাম আমার কাজ শেষ করে বের হই। ও আপত্তি করে বলে, বাবা গেটে অপেক্ষা করছে, আমি তখন ওর সাথে বের হই। গেটের বাইরে এসে এদিক-ওদিক তাকিয়ে দেখি, ওর বাবা (মিন্নির শ্বশুর) কোথাও নেই। তখন আমি বলি তুমি মিথ্যে বলেছ, চলো রুটিন নিয়ে আসি। আমি ওকে নিয়ে ভেতরে যেতে চাই। ঠিক এ মুহূর্তেই ১০-১২ জন আমাদের ঘিরে ধরে ও রিশান ফরাজী ওর পথরোধ করে বলে, তুই আমার বাবা-মা তুলে গালি দিছিস? ও বলে না, তখন রিফাত ফরাজী এসে বলে আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বল, ঠিক এ মুহূর্তে অন্য কয়েকজন বলে ওর কাছে অস্ত্র আছে, এই ধর ধর বলে সামনে এগোতে থাকে। ঘটনার আকস্মিকতায় আমি হতভম্ব হয়ে ওদের পেছনে হাঁটতে থাকি, পরে যখন আক্রমণ করে তখন প্রতিরোধের চেষ্টা করি।’

মিন্নি আরো বলেন, ‘আমি হেল্প চাই অনেকের কাছে, কেউ আসেনি, ওরা চলে যাবার পর রিফাত নিজেই হেঁটে রিকশায় ওঠে, আমার পায়ের পাতা কেটে যাওয়ায় জুতো ছাড়া হাঁটতে পারছিলাম না, তখন জুতো পায়ে দিই, এ সময় একজন আমার হাতে আমার ব্যাগটি তুলে দেয়, পরে আমি দ্রুত গিয়ে রিফাতের রিকশায় উঠে ওকে নিয়ে হাসপাতালে চলে যাই।’

মিন্নি বলেন, ‘আমার কাছে ফোন ছিল না, দুজন ছেলে মোটরসাইকেলে আমাদের রিকশা ফলো করে যাচ্ছিল, আমি তাদের হেল্প চাইলে তারাও ধমক দেয়।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব বিষয় নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে মিন্নি বলেন, ‘কিছু লোক আছে যারা বিষয়টি ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে চেষ্টা করছে। আমি সবাইকে বলব, বিয়ের মাত্র দুই মাসের মাথায় স্বামীকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা হতে দেখেছি। মানসিকভাবে আমি বিধ্বস্ত। আমার অনুরোধ, আমি তো আপনাদের মেয়ে বা বোন হতে পারতাম।’

মিন্নি অনুরোধ করে বলেন, আপনারা না জেনে কোনো মন্তব্য কইরেন না। আমি চরম মানসিক নিপীড়নে ভুগছি। কেউ আমাদের পাশে নেই, সবাই শুধু সমালোচনায় মুখর। আমি সবার সহযোগিতা চাই।