আর্জেন্টিনার দুর্দশায় ব্রাজিল কী ভাবছে

ছয় মাস আগেই রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে ব্রাজিল। তিতের দল এখন তাই ফুরফুরে মেজাজে। এদিকে তাঁদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন প্রায় মুছে যাওয়ার পথে, কিন্তু এ নিয়ে ‘সেলেসাও’দের কোনো মাথাব্যথা নেই। এমনকি কোনো সহানুভূতিও নয়!

৯ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত কিটোতে গত ১৬ বছরে জেতেনি আর্জেন্টিনা। ইকুয়েডরের এ রাজধানীতে কাল বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে পাঁচটায় নিজেদের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ইকুয়েডরের মুখোমুখি হবে হোর্হে সাম্পাওলির দল। জিতলে প্লে-অফ খেলা নিশ্চিত। তবে পেরু-কলম্বিয়া ম্যাচটা ড্র হলে এবং চিলি যদি হারে ব্রাজিলের কাছে, তাহলে রাশিয়া বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার টিকিট পাবে আর্জেন্টিনা। অর্থাৎ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিশ্বকাপে তুলতে ব্রাজিলের কিন্তু ভূমিকা রাখার সুযোগ থাকছে।
কিন্তু ব্রাজিল কোচ তিতের মাথায় এসব নেই। রাশিয়া বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনাকে না দেখার সম্ভাব্যতা প্রসঙ্গে সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে দার্শনিক বনে গেলেন তিতে, ‘বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়ার ব্যাপারটা এক ম্যাচের ওপর নির্ভর করে না। এটা আসলে নির্ভর করে পুরো বাছাইপর্বের ফলের ওপর। বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাওয়ায় এর আগে আমরা একে অপরকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। কিন্তু অন্য দলগুলোর কী অবস্থা, তা ভাবতে পারছি না। ওঁদের অবশ্যই ঘুমোতে সমস্যা হওয়ার কথা; পরিশ্রমের ফসল তো তুলে নেবে অন্যরা।’
ব্রাজিল ফরোয়ার্ড গ্যাব্রিয়েল জেসুসের বয়স মাত্র ২০ বছর। এই বয়সেই প্রতিপক্ষের গোলপোস্টের সামনে যেমন কুশলী, মুখেও ঠিক তেমনি। বাস্তববাদী জেসুস বাছাইপর্বে আর্জেন্টিনার বাজে অবস্থার জন্য দোষ দিচ্ছেন মেসিদেরই। পাশাপাশি নিজেদেরও যে কিছুই করার নেই, সেটাও বুঝিয়ে দিলেন ম্যানচেস্টার সিটি তারকা, ‘মেসির দক্ষতা ও আর্জেন্টিনার গুরুত্ব সম্বন্ধে সবাই জানে। তারা এখন যেখানে দাঁড়িয়ে, সেটা তাদের কর্মফলের জন্য। হ্যাঁ, এটা ঠিক মেসি সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়দের একজন। কিন্তু আমাদের শুধু নিজেদের নিয়েই ভাবতে হবে।’
ব্রাজিল ডিফেন্ডার মিরান্ডার কথায়ও সহানুভূতির লেশমাত্র, ‘এটা খুব স্বাভাবিক যে বিশ্বকাপে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা কিংবা জার্মানি না থাকলে আসরটি বেশ আবেদন হারাবে। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য ছিল বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা, প্রতিপক্ষ দলগুলোর উচিত হবে নিজেদের সমস্যা নিজেরাই সমাধান করা।’
বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে পাঁচটায় সাও পাওলোয় স্বাগতিক হয়ে চিলির মুখোমুখি হবে ব্রাজিল। এ ম্যাচ ঘিরে ব্রাজিলিয়ান সমর্থকেরা গত সপ্তাহ থেকে টুইটারে ঝড় তুলেছে, ‘ছেড়ে দাও ব্রাজিল’ শিরোনামে ট্রেন্ড শুরু হয়ে গেছে। সেটা যে আর্জেন্টিনাকে আগেই ছিটকে ফেলার জন্য, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমনও গুঞ্জন উঠেছে, ব্রাজিল কৌশলগত কারণেই ম্যাচটা ছেড়ে দেবে।
কিন্তু জেসুস দাবি করলেন, ম্যাচটি তারা খেলবেন পেশাদার অবস্থান থেকে, ‘আমরা তিন ম্যাচ আগেই বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছি। কিন্তু এতে দলের জয়ের প্রতি একাগ্রতা কিংবা আচরণে কোনো প্রভাব পড়েনি এবং সেটা এখনো অপরিবর্তিত।’ সূত্র: রয়টার্স