আ’লীগের মন্ত্রিসভায় ‘ব্যতিক্রম’ ওবায়দুল কাদের

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে চারবার মন্ত্রিসভা গঠন করে আওয়ামী লীগ। এ চারবারই মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়ে ব্যতিক্রম হয়েছেন একজন ব্যক্তি। তিনি হলেন ওবায়দুল কাদের।

ওবায়দুল কাদের ১৯৫০ সালের ১ জানুয়ারি, নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানার বড় রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম মোশারফ হোসেন।

ওবায়দুল কাদের বসুরহাট সরকারি এএইচসি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এসএসসি ও নোয়াখালী সরকারি কলেজ থেকে মেধা তালিকায় স্থান নিয়ে এইচএসসি পাস করেন। এর পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্সসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

তিনি কলেজজীবন থেকে ছাত্ররাজনীতি শুরু করেন। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলন এবং ১৯৬৯ সালে গণআন্দোলন ও ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন এবং কোম্পানীগঞ্জ থানা মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) অধিনায়ক ছিলেন। রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার কারাবরণ করেন।

১৯৭৫ এর পর এক নাগারে দীর্ঘ আড়াই বছর কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকাবস্থায় তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হন এবং পর পর দুবার ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।

ওবায়দুল কাদের ১২ জুন ১৯৯৬-এর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নোয়াখালী-৫ আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২৩ জুন সংসদ সদস্য হিসেবে শপথগ্রহণ করেন। একই দিনে যুব ক্রীড়া ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন।

তিনি ২০০১ সালের ১৫ জুলাই পর্যন্ত প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

২০০২ সালের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন থেকে ২০০৯-এর সম্মেলন পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রথম যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন।

১/১১-পরবর্তী তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে তিনি ২০০৭ সালের ৯ মার্চ জরুরি বিধিতে গ্রেফতার হয়ে ১৭ মাস ২৬ দিন কারাবরণ করেন। ২০০৮ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তিনি জামিনে মুক্ত হন।

তিনি ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর পুনরায় দ্বিতীয়বারের মত নোয়াখালী-৫ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন।

২০০৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত হন।

এরপর ২০০৮ সালের শেখ হাসিনার দ্বিতীয় মেয়াদের সরকারের শুরুর দিকে মন্ত্রিসভায় স্থান না পেলেও মেয়াদের মাঝামাঝি এসে যোগাযোগমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।

এর পর ২০১৪ সালে শেখ হাসিনার তৃতীয় মেয়াদে সরকারে আবারও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান ওবায়দুল কাদের।

২০১৫ সালের দিকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়কে ভেঙে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেল মন্ত্রণালয় নামে দুটি আলাদা মন্ত্রণালয় করা হলে তিনি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।

২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনে তিনি ২০১৬-১৯ মেয়াদে দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগ যে সরকার গঠন করতে যাচ্ছে, তাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠিত মন্ত্রিসভায় চতুর্থবারের মতো স্থান করে নিয়েছেন তিনি।