‘আল্লাহপাক শেখ হাসিনাকে সৃষ্টি করেছেন মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য’

বিএনপির আন্দোলন আর কোনো দিন সফল হবে না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আলোর পথে রয়েছে। আর বিএনপি মানে হাওয়া ভবনের দুর্নীতি, লুটপাট ও অগ্নিসন্ত্রাস। বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশ আবারও অন্ধকারে পতিত হবে। বাংলার মানুষ আর বিএনপির অন্ধকারে ফিরে যাবে না।’
.
বুধবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার শক্তিপুর নুরজাহান ভবন চত্বরে বাংলা একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা মহা-পরিচালক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. মযহারুল ইসলামের ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

শেখ হাসিনাকে মানবতার নেত্রী উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মহান আল্লাহপাক বঙ্গবন্ধুকে সৃষ্টি করেছেন বাংলার স্বাধীনতার জন্য, আর শেখ হাসিনাকে সৃষ্টি করেছেন মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। শেখ হাসিনা এখন সারা বিশ্বের বিস্ময়। সোয়া ৬ লক্ষ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও খাদ্য দিয়ে তিনি উদারতার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যা সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। অথচ বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দলের তা চোখে পড়ে না।’

খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, ‘ফটোসেশনের জন্য তিনি (খালেদা জিয়া) একবার বিশাল গাড়িবহর নিয়ে কক্সবাজার গিয়ে শো-ডাউন করেছেন। তার দলের মহাসচিবও একবার গিয়েছিলেন। অথচ আমি ২৫ দিন রোহিঙ্গাদের পাশে ছিলাম। কোনটা মন থেকে আর লোক দেখানো তা মানুষ বোঝে।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০০১ থেকে ২০০৬ সালের রক্তাক্ত ইতিহাস বাংলার মানুষ ভোলেনি।’

২০১৩-১৪ সালের অগ্নিসন্ত্রাসের কথাও ভুলে যায়নি। ক্ষমতায় থাকতে তারা সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া, মঞ্জুরুল ইমাম, আহসানউল্লাহ মাস্টারসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। মা-বোনদের ধর্ষণ করেছে। আওয়মী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীর রক্ত ঝরিয়েছে। রক্তের নদী আর কান্নার দরিয়ায় ভাসিয়েছে মানুষকে। এখন তারা আবার লোক দেখানো মায়াকান্না করছে।’

বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে বিএনপি নেত্রী লন্ডনে চলে গেলেন, আন্দোলন থাকলো তার ভ্যানিটি ব্যাগে। এ বছর না সেই বছর, আন্দোলন হবে কোনো বছর। পেট্টোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা, গাড়ি পোড়ানো, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট ও গাছ ধংস করার আন্দোলনের সাথে বাংলার মানুষ আর নেই।’

দলীয় নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘দলের ভেতরে প্রতিযোগীতা থাকবে, সেটা যেন অসুস্থ না হয়। যারা উন্নয়ন করবেন আর সকলের সাথে ভাল আচরণ করবেন আগামী নির্বাচনে তাদেরকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। দু:সময়ের নেতাকর্মীদের কাছে টেনে নিন। দলে অনুপ্রবেশকারী আগাছাদের ঠাঁই দিবেন না। দল ক্ষমতায় না থাকলে ৫ হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।’

প্রফেসর ড. মযহারুল ইসলাম স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য প্রফেসর আব্দুল খালেকের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহম্মেদ, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য পারভীন জামান কল্পনা, মেরিনা ইসলাম কবিতা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপিসহ আরো অনেকে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু এমপি, তানভীর ইমাম এমপি, সাবেক এমপি চয়ন ইসলাম, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সুইট, জেলা প্রশাসক কামরুন নাহার সিদ্দিকা, পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিনসহ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।