ইউজিসি এবং গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাল্টাপাল্টি কাদা ছোড়াছুঁড়ি, বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের ভিসিকে অবরুদ্ধ করার চেষ্টা

বিধান মুখার্জী, গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : গত ২৬ এপ্রিল গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অননুমোদিত কিন্তু শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া বিবিএ সহ ৭ টি কোর্সে শিক্ষার্থীদের ভর্তি না হবার অনুরোধ জানিয়ে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।ইউজিসি কর্তৃক প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের জের ধরে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুর একটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে রেজিস্ট্রার ও উপাচার্যের কার্যালয় অবরুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে বিবিএ বিভাগের বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে প্রবেশ করে।এসময় অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশঙ্কায় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে ভিসি ও রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ চেয়ে এবং ইউজিসির নিয়ম মেনে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার পক্ষে স্লোগান দেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বললে তারা জানান, ২৬ এপ্রিল ইউজিসির প্রকাশিত বিজ্ঞাপনের জবাবে গন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ‘গণ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ম মানে কিন্তু ঘুষ দেয়না’ শীর্ষক বিজ্ঞাপন প্রকাশের পর কমিশনের বক্তব্য শীর্ষক এক নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ইউজিসি। নতুন বিজ্ঞপ্তিতে গন বিশ্ববিদ্যালয়কে সরাসরি ইউজিসির কার্যালয়ে লিখিত কারণ

বা অভিযোগের প্রমান পেশ করার আদেশ দেন ইউজিসি কমিশন কর্তৃপক্ষ। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে কোন নির্দেশনা না আসায় অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশঙ্কায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে বিবিএ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিবিএ বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান ‘ ইউজিসি এবং গন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন কাদা ছোড়াছুঁড়ি খেলায় বিবিএসহ সাতটি কোর্সের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন হুমকির মুখে’। এছাড়াও গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ কোর্সে অনার্স সম্পন্ন করা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এবং ইন্টার্ন শিপে থাকা শিক্ষার্থীদের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।

আন্দোলনের একপর্যায়ে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে রেজিস্ট্রারকে না পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডাঃ লায়লা পারভিন বানুর কার্যালয়ের সামনে স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে উপাচার্য ডাঃ লায়লা পারভিন বানু তার কার্যালয় থেকে বের হয়ে এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। তিনি শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করে বলেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ বিভাগের অনুমোদন আছে এবং এব্যাপারে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে যাবতীয় তথ্য-প্রমানও রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী পদক্ষেপ জানতে চাইলে উপাচার্য জানান ইতমধ্যে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে হাইকোর্টে মামলা করা হয়েছে। আগামি ১৬ মে আদালত রায় ঘোষণা করবে। তিনি আরো বলেন, ‘ আমরা শতভাগ নিশ্চিত মামলায় আমরাই জয়ী হব, দুশ্চিন্তার কিছু নেই’।

উপাচার্যের আশ্বাসের পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আন্দলন বন্ধ করে একাডেমীক ভবনে ফিরে আসেন এবং আন্দোলনের ব্যাপারে জানতে চাইলে জানান, আমরা উপাচার্যের আশ্বাস পেয়ে ১৬ তারিখ পর্যন্ত আন্দলন স্থগিত করছি এবং এই সময়ের মধ্যে বিষয়টির সুরহা না হলে পরবর্তীতে আন্দোলন আরো কঠোরতর হবে বলেও জানান তারা।

উল্লেখ্য প্রায় সাত বছর ধরে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার পর সম্প্রতি বিবিএ বিভাগের অননুমোদনের বিষয়ে ইউজিসির বিজ্ঞাপন প্রকাশ এবং গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপরীত অবস্থান এবং দাবীর কারনে শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের হতাশা বেড়েই চলেছে।