ইঞ্জিন ছাড়াই ঘণ্টায় ১৬০ কি.মি. বেগে চলবে ট্রেন

দেখতে অনেকটা মেট্রো রেলের মতো। তবে গতি অন্য ট্রেনের তুলনায় বেশি। সর্বোচ্চ গতি হবে ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার। ঠিক এমনই এই প্রথম ইঞ্জিনবিহীন ট্রেন চালু করতে যাচ্ছে ভারত। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে কয়েক মাসের মধ্যেই চালু হবে এ ট্রেন।

সম্পূর্ণ ভারতীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই ট্রেনের নাম দেয়া হয়েছে ‘ট্রেন এইটটিন’। যা তৈরি করছে চেন্নাইয়ের ইন্টিগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরি বা আইসিএফ। প্রথম ট্রেনটি এ বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসের মধ্যেই তৈরি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এবেলার প্রতিবেদনে বলা হয়, ঠিক যেভাবে লোকাল ট্রেন বা মেট্রোর কামরাগুলি ‘সেলফ প্রোপেলড’ প্রযুক্তিতে ইঞ্জিন ছাড়াই চলতে পারে, ঠিক একই প্রযুক্তি ব্যবহার করে চলবে এই নতুন ট্রেন। এই ট্রেন তৈরির জন্য বিদেশি কোনো প্রযুক্তির সাহায্য নেয়া হয়নি বলে দাবি করেছে নির্মাণকারী সংস্থা আইসিএফ।

শুধু প্রযুক্তির দিক থেকেই নয়, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের দিক থেকেও ট্রেন এইটটিন অন্য ট্রেন থেকে টেক্কা দেবে। ১৬ কামরার এই ট্রেনগুলো বড় বড় শহরগুলির মধ্যে যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত হবে। তার মধ্যে দুটি থাকবে এক্সিকিউটিভ ক্লাস এবং ১৪টি নন-এক্সিকিউটিভ ক্লাস। এই কামরাগুলোতে যথাক্রমে ৫৬ এবং ৭৮টি করে আসন থাকবে।

এছাড়াও জিপিএস, ওয়াইফাই, এলইডি লাইটিং, স্বয়ংক্রিয় দরজা, মালপত্র রাখার জন্য প্রশস্ত জায়গা, সম্পূর্ণ রবার ফ্লোরিংয়ের মতো সুযোগ সুবিধা এই ট্রেনে থাকবে। কামরার ভেতরে হুইলচেয়ার রাখার ব্যবস্থাও থাকবে। এ ছাড়াও ট্রেনটি প্ল্যাটফর্মে এলে সিঁড়ির বদলে থাকবে স্লাইডিং ফুটস্টেপ। ট্রেনের ভেতরে যাত্রীরা কোনো ঝাঁকুনিও অনুভব করবেন না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেহেতু এই ট্রেনের দুদিকেই চালকের কেবিন থাকছে, তাই প্রান্তিক স্টেশনে পৌঁছনোর পরেও ইঞ্জিন বদলের প্রয়োজন হবে না। তাছাড়া ‘সেলফ প্রপেলড’ প্রযুক্তিতে চলায় লোকাল ট্রেনের মতোই দ্রুত গতি বাড়াতে পারবে এই ট্রেন। ফলে, যাত্রাপথ সম্পূর্ণ করতে অন্যান্য ট্রেনের তুলনায় এই ট্রেন এইটটিনের অনেকটাই কম সময় লাগবে।

ট্রেন তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে দু’তিন মাসের পরীক্ষামূলক চালুর পরে আরডিএসও (রিসার্চ ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশন) ট্রেনটিকে যাত্রী বহনে ছাড়পত্র দেবে বলেই আশাবাদী রেলমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। সব মিলিয়ে এই ধরনের মোট ছয়টি ট্রেন তৈরির জন্য রেলমন্ত্রণালয় থেকে আইসিএফকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।