ইন্দোনেশিয়ায় সমকামিতার শাস্তি যেভাবে দেয়া হল!

ইন্দোনেশিয়ায় সমকামিতার অভিযোগে দুই কিশোরকে শাস্তি দেয়া হয়েছে। শাস্তি হিসেবে তাদের প্রত্যেককে ৮৫টি বেত্রাঘাত করা হয়। দেশটির আচে প্রদেশে সোমবার একটি সমজিদের সামনে জনসমক্ষে কার্যকর করা হয় এই শাস্তি। এসময় অপরাধীদের শরীরে সাদা জোব্বা পরানো ছিল। আর শাস্তিদাতাদের পরনে ছিল কালো রঙয়ের পোশাক।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, সমকামিতার অভিযোগে গত মার্চে হাতেনাতে তাদের আটক করে স্থানীয় জনতা। এদের একজনের বয়স ২০ এবং অপরজনের ২৩ বছর। কিন্তু তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
ইন্দোনেশিয়ায় সমকামিতা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত না হলেও আচে প্রদেশ এই বিষয়ে কঠোর। একমাত্র আচে প্রদেশই কঠোরভাবে ইসলামি শরিয়াহ্‌ মেনে চলে। তবে প্রদেশটিতে এবারই প্রথম সমকামিতার দায়ে জনসমক্ষে কারও শাস্তি দেয়া হল।

প্রাদেশিক শহর বান্দা আচেহ’র ওই সমজিদের সামনে শাস্তি দেয়ার সময় অসংখ্য মানুষ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তাদের অনেকেই চিৎকার করে বলছিলেন, ‘অপরাধীদের আরও জোরে বেত্রাঘাত করা হোক। এদের শিক্ষা হওয়া প্রয়োজন।’
আবার কেউ কেউ বলছিলেন, ‘এদের এমন কঠোর শাস্তি দেয়া হোক যেন কেউ আর এপথে যাওয়ার সাহস না পায়।’
গত মার্চে প্রদেশের একটি ভাড়া বাসায় সমকামি দুই যুবক যোগাযোগ করে থাকে এমন অভিযোগে অভিযান চালায় স্থানীয় জনতা। এসময় তারা দরজা ভেঙ্গে অপ্রস্তুত অবস্থায় দুই কিশোরকে ধরে ফেলে। এদের মধ্যে একজন মেডিক্যালের শেষ বর্ষের ছাত্র ছিল। স্থানীয়রা ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে বহিস্কারের দাবি জানিয়েছে।
প্রদেশটিতে গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে কঠোরভাবে শরিয়া আইন মেনে চলা হচ্ছে। সেখানে সমকামিতা ভয়াবহ অন্যায় হিসেবে বিবেচিত। তবে শাস্তি এবারই প্রথম কার্যকর করা হল।

ইন্দোনেশিয়ায় সমকামিতা উদিয়মান সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। গত মাসে সুরাবিয়া শহরে সমকামিতার অভিযোগে পুলিশ ১৪ জনকে আটক করে। তাছাড়া গত রোববার রাতে জাকার্তায় সমকামি এক পার্টি থেকে ১৪১ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অবশ্য পরদিন এদের অধিকাংশই মুক্তি পায়।
এদিকে, সমকামি ব্যক্তিদের দমন পীড়নে বড়ই নাখোশ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ মানবাধিকার সংগঠনগুলো। পশুর চাইতেও ঘৃণ্য এই কাজ যারা করে তাদের আসলে মানুষ হিসেবেই দেখা উচিত বলে সংগঠনগুলোর মত। তাদের অভিযোগ, সমকামিদের উপর বেত্রাঘাতই বরং নিষ্ঠুর, অমানবিক এবং অপমানজনক আচরণ।