‘ইশ, আমি যদি ওখানে থাকতে পারতাম!’

আমেরিকায় বিনোদন, রাজনীতি ও পেশাজীবী জগতে ‘মি টু’ আন্দোলনের ঢেউয়ে দেশটির বিভিন্ন খাতের বহু প্রভাবশালী মানুষ ফেসে গেছেন। আর সেই তালিকায় এবার যুক্ত হলেন সদ্য ৮০ বছর বয়সে পা রাখা বর্ষীয়ান অভিনেতা মর্গান ফ্রিম্যানও। তার বিরুদ্ধে অন্তত ৮ জন নারী পৃথকভাবে যৌন হয়রানি ও হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে সংবাদ প্রকাশ করেছে সিএনএন।

এ ব্যাপারে নিউ ইয়র্ক টাইমস লিখেছে, সিএনএন’র একজন বিনোদন সাংবাদিক গত বছর মর্গান ফ্রিম্যানের সাক্ষাৎকার নিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে ওই সাংবাদিক ফ্রিম্যানের ইঙ্গিতপূর্ণ আচরণ দেখে অস্বস্তি বোধ করেন। সেই থেকেই শুরু এই যাত্রা।

খবরে বলা হয়, সিএনএন’র রিপোর্টার কোল মেলাস বৃহস্পতিবার এই রিপোর্ট প্রকাশ করেন। তদন্ত শেষে তিনি রিপোর্ট করলেন, তিনি বেশ কয়েকজন নারীর সন্ধান পেয়েছেন, যারা কাজ করতে গিয়ে ফ্রিম্যানের যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।

সাংবাদিক মেলাস রিপোর্টের সূত্র পান খোদ নিজের কাছ থেকেই। গত বছর ‘গোয়িং ইন স্টাইল’ নামে ফ্রিম্যান অভিনীত একটি ছবির প্রচারণা অনুষ্ঠান কাভার করতে পাঠানো হয়েছিল কোল মেলাসকে। ওই সময় মেলাস ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। সেদিন ফ্রিম্যান তার শরীরের দিকে তাকিয়ে মন্তব্য করেন, ‘ইশ, আমি যদি ওখানে থাকতে পারতাম!’

পরবর্তীতে নিজের মাতৃত্বকালীন ছুটি থেকে ফিরে তিনি এই ইস্যুতে কাজ করা শুরু করলেন। ঠিক ওই সময়ই কর্মস্থলে নারীদের যৌন হয়রানির শিকার হওয়া নিয়ে ‘মি টু’ আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হতে শুরু করে। এভাবেই ধীরে ধীরে মোট ৮ জন নারীর সন্ধান পান তিনি। এই নারীরা বিভিন্ন চলচ্চিত্রের কাজে বা অন্য কোনো ক্ষেত্রে মর্গান ফ্রিম্যানের সঙ্গে কাজ করার পরিস্থিতিতে ছিলেন। তখনই তাদের সঙ্গে ওই তিক্ত অভিজ্ঞতা ঘটে।

কোল মেলাস একাই অবশ্য মর্গান ফ্রিম্যানের কাহিনী লিখেননি। তার সঙ্গে ছিলেন সিএনএন’র একজন সম্পাদক আন ফুং।

এ প্রসঙ্গে পয়নার ইন্সটিটিউটের জার্নালিজম এথিক্স বিভাগের চেয়ারম্যান ইন্দিরা লক্ষ্মানন বলেন, মর্গান ফ্রিম্যানকে নিয়ে মেলাসের ওই প্রতিবেদনে নৈতিকতার সীমা লঙ্ঘিত হয়নি। নিজের প্রতিবেদনে তিনি সম্পূর্ণভাবে একজন ভিকটিম হিসেবে নিজের অবস্থান প্রকাশ করেছেন।