ইসির সঙ্গে সংলাপ : আসেননি বিচারপতি আজিজ কমিশনের সদস্যরা

আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ধারাবাহিক সংলাপের শেষ দিন বিগত নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে বর্তমান কমিশন। উদ্দেশ্য, তাদের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময়। এই সংলাপে আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে বিচারপতি এম এ আজিজ কমিশনের সদস্যদেরও। কিন্তু তাদের কেউ সংলাপে আসেননি।

আগামী জাতীয় নির্বাচনের ঘোষিত পথ নকশা অনুযায়ী প্রথমে নাগরিক সমাজের সদস্য এবং পরে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুল এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও নারী নেত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে নির্বাচন কমিশন। এর ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সকালে কমিশন সচিবালয়ে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক শুরু হয়।

এই বৈঠকে ১৯৯১ সালের পর থেকে দায়িত্ব পাওয়া কমিশন সদস্যদের আমন্ত্রণ জানান হয়। বাদ পড়েনি এক এগারোর পর পদত্যাগ করা আজিজ কমিশনের সদস্যরাও।

এরশাদ শাসনামলের পর এখন পর্যন্ত যত নির্বাচন কমিশন গঠন হয়েঠে তাদের মধ্যে অন্যতম বিতর্কিত ছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে কে এম আজিজের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। সে সময় ভুয়া ভোটার করতে নির্বাচন কমিশনের লিখিত চিঠিও ফাঁস হয় গণমাধ্যমে। আর সে সময়ের বিরোধী দল কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দেয়।

কে এম আজিজের নানা বক্তব্য এবং ওই কমিশনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সে সময় হাস্যরসের জন্ম দেয়। আর ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারির পর পদত্যাগ করেন কে এম আজিজ। পরে ওই কমিশনের বদলে এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বে নতুন কমিশন গঠন হয় এবং তাদের অধীনেই হয় ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচন।

তিন মাস ধরে ধারাবাহিক সংলাপের শেষ দিনে এসে নির্বাচন কমিশনের সাবেক সদস্য ও আমলাদের পেয়ে উচ্ছ্বুসিত প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা।

আজিজ কমিশনের সদস্যরা না এলেও বাকি পাঁচটি কমিশনের সদস্যরা এই সংলাপে উপস্থিত আছেন। তবে কে এম আজিজ ছাড়া বাকি পাঁচ সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনারের মধ্যে উপস্থিত আছেন দুই জন। এরা হলেন বিচারপতি আব্দুর রউফ ও এটিএম শামসুল হুদা।

জীবিত বাকি দুই সাবেক সিইসি আবু হেনা ও কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ অনুপস্থিত থাকলেও তাদের কমিশনের সদস্য ও সাবেক সচিবরা সংলাপে অংশ নিচ্ছেন। আর ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনাকারী কমিশনের প্রধান এম এ সাঈদ মারা গেছেন।

নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে সকাল ১১ টায় সূচনা বক্তব্যে সিইসি সবাইকে স্বাগত জানান। সাবেক আমলা নূরুল হুদা চাকরি জীবনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘ধারাবাহিক সংলাপের আজ শেষ দিন। সুদীর্ঘকালের সুশৃঙ্খল চাকরি জীবনের চমৎকার সব অর্জন থেকে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অংশটুকু আমাদের বলুন।’

সিইসি বলেন, ‘গত প্রায় তিন মাস ধরে অনেক মূল্যবান কথা শুনেছি, অনেক ভারী ভারী কথা শুনেছি। আজ আপনাদের পেয়ে অনেকটা হালকা অনুভব করছি’।

সাবেক সিইসি, নির্বাচন কমিশনারদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর আগ্রহের কথা জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘আজ বিচিত্র অভিজ্ঞতার গল্প শুনতে চাই। গল্প পরামর্শ আকারে গ্রহণ করবো। যত্ন সহকারে তা সংরক্ষণ করব, তা প্রয়োগ করব।’

সাবেক নির্বাচন কমিশনারদ ছহুল হোসাইন, এম সাখাওয়াত হোসেন, আবদুল মোবারক, আবু হাফিজ, মো. শাহনেওয়াজ,

সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব আবদুল করিম, মনজুর হোসেন, হুমায়ুন কবীরসহ সাবেক স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার, পুলিশ ও মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা সংলাপে অংশ নিচ্ছেন।