ঈদ বাজার : সেমাই তৈরির কারখানায় গরুর মুত্র!

রাজধানীতে ভেজালবিরোধী অভিযানে একটি সেমাই কারখানায় গরুর মুত্র পড়ে থাকতে দেখা গেছে। এমন পরিবেশেই ঈদে বাজারজাত করতে তৈরি হচ্ছিল খাদ্যপণ্যটি।

ঈদের সেমাই খাওয়ার চাল রয়েছে। আর প্রতি বছর রোজার সেমাই কারখানায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে যে চিত্র দেখা যায়, তা রীতিমত উদ্বেগজনক।

নিম্নমানের উপকরণে খাবার তৈরি একটি স্বাভাবিক চিত্র। এর বাইরে পরিবেশও থাকে তথৈবচ। এই বিষয়গুলো স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যপণ্য তৈরি নিশ্চিত করতে সরকারি সংস্থাগুলোর নজরদাবির অভাবকেই নির্দেশ করে।

রবিবার দুপুরে কামরাঙ্গীরচর এলাকায় অভিযান চালায় ঢাকা বিভাগীয় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের একটি দল। এ সময় সেমাই কারখানার এই চিত্র পাওয়া যায়।

অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (উপসচিব) মনজুর মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকটি সেমাই এবং বেকারি পণ্য তৈরির কারখানায় গিয়েছি। তাদের ভেতরের পরিবেশ খুবই অস্বাস্থ্যকর ছিল।’

‘একটি কারখানায় সেমাই তৈরির পাশেই গরুর মুত্র পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেখানে মাছি উড়ছিল।’

‘অন্য একটি সেমাই কারখানার পাশেই প্লাস্টিক কারখানা। আমরা প্লাস্টিক কারখানাটি আপাতত বন্ধ করে দিয়েছি।’

‘একটি পাউরুটির কারখানায় দেখা যায়, নতুন পাউরুটি তৈরি হলেও তার গায়ে মেয়াদ বা তারিখ দেওয়া হচ্ছিল না।’

অভিযানে ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে শান্ত ফুড প্রোডাক্টস, হাশেম ফুড প্রোডাক্টস ও বিউটি ফুড সেমাই কারখানাকে ৫০ হাজার টাকা করে, নাসির ফুড প্রোডাক্টস ও মোহাম্মদ আলী ফুডসকে ৩০ হাজার টাকা করে এবং বোম্বে কনফেকশনারিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

বুমার্সের জরিমানা লাখ টাকা

বাসি খাবার পাওয়ায় প্রসিদ্ধ রেস্টুরেন্ট ‘বুমার্স ক্যাফে’কে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান চালিয়ে এই আদেশ দেন।

রাজধানীর বেইলি রোডের প্রতিষ্ঠানটিকে ২০১৬ সালেও একই অভিযোগে জরিমানা করা হয়েছিল।

ম্যাজিস্ট্রেট জানান, বুমার্সের ফ্রিজে বাসি ভাত রেখে সেই ভাত একটা নোংরা কাপড় দিয়ে ঢেকে রেখা হয়েছিল। একটি পাত্রে পোড়া তেল সংরক্ষণ করা ছিল। আরেকটি গামলায় ময়দার খামির রাখা হয়েছে, যা বেশ পুরনো। এসব বিষয় আমলে নিয়েই জরিমানা করা হয়েছে।

দুই বছর আগে এই ক্যাফেতে অভিযান চালানোর কথা তুলে ধরে মশিউর বলেন, ‘তখন পরিস্থিতি আরও বেশি খারাপ ছিল। আর জরিমানা ছিল ৫০ হাজার টাকা। সংশোধন না হওয়ায় এবার দ্বিগুণ জরিমানা জরিমানা করা হয়েছে।