উচ্চ-পদস্থ সরকারি আমলা ছিলেন এমকে আনোয়ার

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এম কে আনোয়ার রাজনীতিতে আসার আগে পাকিস্তান ও বাংলাদেশে সরকারের উচ্চ-পদস্থ আমলা ছিলেন। পেশাগত দক্ষতা ও সততার কারণে তিনি বেশ নাম ডাক কুড়িয়েছিলেন। চাকরি থেকে অবসর নিয়ে তিনি বিএনপির রাজনীতিতে যোগদেন। বর্নাঢ্য ইমেরজের এই ব্যক্তি সোমবার (২৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১টা ২০ মিনিটে রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।

এম কে আনোয়ারের পুরো নাম মোহাম্মদ খোরশেদ আনোয়ার। ১৯৩৩ সালের ১ জানুয়ারি কুমিল্লার হোমনা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন।

ছাত্র জীবন শুরু করেন নিজ এলাকার স্কুল থেকেই। সেখানে লেটার মার্কসহ ১৯৪৮ সালে মেট্রিকুলেশন, আই.এস.সি, ঢাকা কলেজ ১৯৫০ সাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বি.এস.সি (সম্মান) এবং পরিসংখ্যাণে এম.এস.সি।

কর্মজীবনে ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসে যোগ দিয়েছিলেন। তার ৩৪ বছরের পেশাগত জীবনে (১৯৫৬-১৯৯০) তিনি ফরিদপুর ও ঢাকার ডিপুটি কমিশানর, জুটমিল কর্পোরেশনের সমিতি, টেক্সটাইল মিল কর্পোরেশনের সভাপতি, বাংলাদেশ বিমানের সভাপতি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল ছিলেন।

তিনি মন্ত্রীপরিষদ সচিব ছিলেন। ১৯৭২ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত তিনি প্রশাসনে বিভিন্ন উচ্চপদে পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি একজন সি.এস.পি কর্মকর্ত। এম.কে আনোয়ার ১৯৭১ সালে ঢাকা জেলা প্রশাসক ছিলেন। তার পেশাগত জীবনের এক সময় পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রপতি লেঘারীর অধীনে চাকুরী করেছেন।

ছত্রজীবন থেকে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন এম কে আনোয়ার। ঢাকা কলেজে ছাত্র সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার সময় ফজলুল হক হলের ছাত্র সংসদের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। ফজলুল হক হলের ছাত্র থাকা অবস্থায় এম.কে আনোয়ার ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন।

১৯৯১ সালের নির্বাচনের পূর্বে বি.এন.পিতে যোগ দেন তিনি। ১৯৯৭ সালে দলের সহ-সভাপতি হোন। ১৯৯১ সালের মার্চে, এম কে আনোয়ার বেগম খালেদা জিয়ার বি.এন.পি সরকারের মন্ত্রীপরিষদের সদস্য ছিলেন।

তিনি বাণিজ্য, নৌ-পরিবহন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রি ছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি পুনরায় বি.এন.পি’র ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিলেন। পাঁচবার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পাশাপাশি বিএনপি সরকারের সময়ে দু’বার মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এ প্রবীণ রাজনীতিবিদ।

এম.কে আনোয়ার বিবাহ করেছেন ১৯৫৬ সালে এবং তার দুই পুত্র, এক কন্যা আছে। মানিকগঞ্জের আব্দুল লতিফ বিশ্বাসের কন্যা তার স্ত্রী মাহমুদা আনোয়ার একজন গৃহিনী। আব্দুল লতিফ বিশ্বাস পাকিস্তান আমলে কেন্দ্রিয় সরকারের মন্ত্রি ছিলেন এবং তিনি শেরে বাংলা ফজলুল হকের অনুসারী ছিলেন। সূত্র: উইকিপিডিয়া