উত্তাল পদ্মায় ফেরিতে দুর্ভোগ, লঞ্চ-স্পিডবোটে চাপ

একদিকে পদ্মায় তীব্র স্রোত, অন্যদিকে নদীতে নাব্য সংকট। এই দুই কারণে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে যাত্রী দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। সবকিছু মিলিয়ে ঘাট এলাকা বৈরী পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১০দিন ধরে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটের লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে নদীতে নাব্য সংকট দেখা দেয়। এর পরেই ফেরিগুলো চলাচলে ব্যাঘাত ঘটে। ফলে প্রতিদিনই ফেরিগুলো হাফ লোড নিয়ে চলাচল করে। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।

নাব্য সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করায় মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) রাত ১০টা থেকে ফেরি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে বুধবার(১৫ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সীমিত আকারে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল করছে। এর মধ্যে যাত্রীবাহী বাস, এ্যাম্বুলেন্স ও পচনশীল পণ্যের ট্রাককে অগ্রাধিকার দিয়ে ছোট আকারে ফেরিতে পার করা হচ্ছে।

এদিকে ফেরি চলাচল ব্যাঘাত ঘটায় যাত্রীদের চাপ বেড়েছে লঞ্চ ও স্পিডবোটে। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রীরা লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই পাড়ি দিচ্ছেন উত্তাল পদ্মা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত কয়েক দিনের ফেরি চলাচলে ব্যাঘাত ঘটায় ঘাট এলাকায় নাজুক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাট এলাকায় আটকা থেকে যাত্রী ও চালকরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। যাত্রীরা বাধ্য হয়ে তীব্র স্রোতের মধ্যে উত্তাল পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন।

খুলনা থেকে ঢাকাগামী যাত্রী রিপন চন্দ্র ঘোষ বলেন, এই নৌরুটে যাতায়াতে আমাদের দুর্ভোগ কখনই কমছে না। ১২ মাস নদীতে ড্রেজিং করেও সমস্যার সমাধান হয় না। কারণ কতটুকু বালু অপসারণ করা হচ্ছে কিংবা ড্রেজিং করে নাব্যতা দূর হচ্ছে কিনা? এসব বিষয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের মানুষ নজদরদারি রাখলে পরিস্থিতি খুব সহজেই নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।

মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক রুহুল আমিন জানান, কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌরুটের লৌহজং টার্নিং পয়েন্টে নাব্য তীব্র আকার ধারণ করায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নদীতে চায়না ড্রেজারসহ কয়েকটি ড্রেজার দিয়ে বালু অপসারণ করা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় উভয় পাড়ে আটকা পড়েছে কয়েকশ’ যানবাহন।

কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ট্রাফিকের পরিদর্শক উত্তম শর্মা বলেন, নদীতে নাব্য সংকট কেটে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশা রয়েছে। আশা করছি ঈদের আগেই এই বৈরী পরিস্থিতি কেটে যাবে। ঘাট এলাকায় যানজট সৃষ্টি না হওয়ার লক্ষে ট্রাফিক পুলিশ সার্বক্ষণিক কাজ করে যাচ্ছে।