উদ্বোধনের অপেক্ষায় দেশের প্রথম ছয় লেনের ফ্লাইওভার

ফেনীর মহিপালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নির্মিত দেশের প্রথম ছয় লেনের ফ্লাইওভারের কাজ ৯৭ শতাংশ শেষ হয়েছে। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের রং, সাজসজ্জা ও উদ্বোধনীর প্রস্তুতি কাজ। আগামী ৪ জানুয়ারি ফ্লাইওভারটি উদ্বোধন হতে পারে বলে জানা গেছে।

ফ্লাইওভার প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ৬৯০ মিটার দীর্ঘ ২৪ দশমিক ৬২ মিটার প্রশস্ত এই ফ্লাইওভারের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১৫৭ কোটি টাকা। ২০১৫ সালের নভেম্বরে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল ২০১৮ সালের জুন মাস। তবে নির্ধারিত সময়ের প্রায় ছয় মাস আগেই উদ্বোধন হতে চলছে ফ্লাইওভারটি।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৯ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আবদুল মোনেম লিমিটেড মহিপাল ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ করছে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বরাত দিয়ে ফেনী পৌরসভার ডিপুটি মেয়র স্বপন মিয়াজী বলেন, ৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ফেনীর এই ফ্লাইওভারটির উদ্বোধন করবেন। এ সময় ফেনীতে ফ্লাইওভারটির নাম ফলক উন্মোচন করবেন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। এ উপলক্ষে মহিপালস্থ চাড়িপুর স্কুল মাঠে একটি সুধী সমাবেশও অনুষ্ঠিত হবে।

ঢাকা-চট্টগ্রামের দ্রুত গতির গাড়িগুলো ফ্লাইওভার ব্যবহার করে গন্তব্যে চলে যেতে পারবে। এতে সময় যেমন বাঁচবে তেমন যানজটে পড়তে হবে না বলেও জানান তিনি।

নির্মাণ কাজের তত্ত্বাবধায়ক সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশনের (এসডব্লিউবি) কর্মকর্তা মেজর ফয়সাল বলেন, ফ্লাইওভারের ৯৭ শতাংশের কাজ শেষ হয়েছে। চলিত মাসের ৩১ তারিখের মধ্যে সব ধরনের কাজ শেষ হবে।

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মহিপালের প্রবেশপথ চাঁড়িপুর রাস্তার শুরু থেকে মহাসড়কের ফেনী পল্লী বিদ্যুৎ অফিস পর্যন্ত নির্মিত হয়েছে ৬৬০ মিটারের এই ফ্লাইওভার। ইতোমধ্যে ৬৫০ মিটারের কাজ শেষ হয়েছে। সর্বমোট ১৭৮টি পাইলের সবগুলোর কাজ শেষ হয়েছে।

এছাড়া ২২ পাইলের ক্যাম্প, মোট ৬৬.৩৩ মিটার পিয়ার কলামের কাজ, দুই পাশে ১৩২০ মিটারের কাজ, ২২১০ মিটার সাইট ড্রেনের মধ্যে ২১০৪ মিটারের কাজ শেষ হয়েছে। সর্বমোট ১৩২ পিসি গার্ডার, অ্যাপ্রোচ রোড ডান/বামের ৩৬৪০ মিটারের মধ্যে ৩৫৩০ মিটার, ১০টি পিয়ার হেডের কাজ, ১১টি ডেক্স স্লাবের কাজ, ৫০৬টি ক্রস গার্ডার, ৩৬৪০ মিটার কার্ভ স্টোনের কাজ, ১৩২০ মিটার ফুটপাতের ওয়ালের ১৩১৫ মিটারের কাজ, ৬৬০টি মেডিয়ান পিলারের ৬৫০টির কাজ, রি ব্লক বসানোর কাজও শেষ হয়েছে।

ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রামগামী ছোট পরিবহন চলাচলের পাশাপাশি মহিপাল হয়ে নোয়াখালী-লক্ষ্মীপুর সড়কে চালাচলকারী গাড়িগুলো (দাগনভূঞা, সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, লক্ষ্মীপুর, রামগতি ও রায়পুর) যাতায়াত করে। ফ্লাইওভারটি চালু হলে মহিপাল অংশে পূর্বে যানজট সৃষ্টি হলেও গাড়ির চাপ আগের থেকে অনেক কমে যাবে বলে জানান ফেনী ট্রাফিক পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম ফারুক।