উদ্বোধনের অপেক্ষায় বাংলার আইফেল টাওয়ার

পর্যটন শিল্পকে আরও বিকাশিত করার লক্ষ্যে ভোলার সর্বদক্ষিণে চরফ্যাশনে নির্মাণ করা হয়েছে উপ-মহাদেশের সবচেয়ে বড় ওয়াচ টাওয়ার। স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের নাম অনুসারে টাওয়ারটির নাম করা হয়েছে জ্যাকব টাওয়ার।

এ টাওয়ার থেকে আশপাশের নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে। ফলে পর্যটক বাড়বে বলে আশা করছে এলাকাবাসী। আগামী ২৪ জানুয়ারি ২ দিনের সফরে ভোলায় পৌঁছে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এ দৃষ্টিনন্দন স্থাপনার উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণে বঙ্গবসাগরের কূলঘেষে দ্বীপ জেলা ভোলার অবস্থান। এ জেলায় রয়েছে নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। বিশেষ করে চর-কুকরি-মুকরি, তাড়ুয়া দ্বীপ, মনপুরা, ডালচরসহ রয়েছে অসংখ্যা চর। প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এসব চরের সৌন্দর্য দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আশেন পর্যটকরা।

তাই পর্যটকদের আরও আকর্ষণ করতে দ্বীপ জেলা ভোলা থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে চরফ্যাশন উপজেলায় আইফেল টাওয়ারের আদলে নির্মাণ করা হয়েছে উপমহাদেশের সর্বোচ্চ ওয়াচ টাওয়ার।

প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯তলা বিশিষ্ট ২১৫ ফুট উচ্চতার এ টাওয়ারে দাঁড়িয়ে দক্ষিণের দৃষ্টিনন্দন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে। থাকছে উচ্চ ক্ষমতার বাইনোকুলার। যাতে ১০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখা যাবে।

সবুজের বুক চিরে নদীর ঢেউ, চর কুকরি-মুকরি, বঙ্গোপসাগরের বিরাট অংশে চোখ জুড়াবে। পর্যটকদের জন্য টাওয়ারের কাছেই সুইমিংপুল আর হেলিপ্যাড সুবিধাসহ থাকছে বিলাসবহুল রেস্ট হাউস। টাওয়ারটি এ এলাকার চিত্র বদলে দেবে। এ টাওয়ার এ অঞ্চলের গৌরব ঐতিহ্যের অবদানসহ পাশাপাশি অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে দেশের বাইরের পর্যটকদের আর্কষণ করবে।

চরফ্যাশন পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কুতুব উদ্দিন, সমাজকর্মী তানজিল রাফি, সাংবাদিক ইয়াছিন আরাফাতসহ আরও অনেকে জানান, এ টাওয়ারটি চরফ্যাশন ও ভোলাসহ সারা দেশের অর্থনৈতিক ও পর্যটন শিল্প বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ টাওয়ার শুধু চরফ্যাশন বা ভোলার নয় বরং সারা দেশেরই ভাবমূর্তি বৃদ্ধি করবে। জ্যাকব টাওয়ার হচ্ছে বাংলার আইফেল টাওয়ার। এরকম টাওয়ারের জন্য পর্যটকদের ভিড় পড়বে এ এলাকায়। টাওয়ারটি চরফ্যাশনের পরিচিতিকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।

ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বন ও পরিবেশ উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব জানান, এ ওয়াচ টাওয়ার বাংলাদেশের উন্নয়নের এক অনন্য স্থাপনা। যা বহির্বিশ্বে আমাদেরকে নতুন পরিচিতি দেবে। এ টাওয়ার দেশের পর্যটন শিল্পে নতুন মাত্রা সৃষ্টি করবে। উপ-মহাদেশের সর্বোচ্চ এ ওয়াচ টাওয়ার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে চরফ্যাশন পৌরসভা বাস্তবায়ন করেছে। টাওয়ারটির ডিজাইন করেছেন স্থপতি কামরুজ্জামান লিটন।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে এ টাওয়ারের কাজ শুরু হয়। আগামী ২৪ জানুয়ারি এ টাওয়ার উদ্বোধন করার কথা রয়েছে রাষ্ট্রপতির। টাওয়ারটি উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে নতুন এক দিগন্তের উন্মোচন হবে এমনটাই প্রত্যাশা সবার।