উন্নয়নের ধারাবাহিকতা না থাকলে অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার দ্বিতীয় মেয়াদে প্রথম মেয়াদের তুলনায় তিনগুণ উন্নয়ন ব্যয় করেছে। ব্যবসায়ী নেতারা মনে করেন, জ্বালানি, অবকাঠামোখাতসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প গ্রহণে সরকার দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, ভবিষ্যতে উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা না থাকলে অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পরবে। পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলছেন, আবারও ক্ষমতায় এলে শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প নেয়ার পাশাপাশি আর্থিক খাত সংস্কারে পদক্ষেপ নেবে সরকার।

প্রমত্তা পদ্মার বুকে নিজস্ব অর্থায়নে জোরেশোরে চলছে দেশের দীর্ঘতম সড়ক ও রেলসেতুর নির্মাণকাজ। যা রাজধানী ঢাকা ও বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের তিন কোটিরও বেশি মানুষের যোগাযোগকে করবে সাশ্রয়ী ও গতিশীল।

শুরু হয়েছে ঢাকা মহানগরীর দীর্ঘদিনের যানজট নিরসনে মেট্রোরেলের কাজও। এ পথে এক ঘণ্টায় চলাচল করতে পারবে ৬০ হাজার যাত্রী।

বিদ্যুতখাতে দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প জাতীয় গ্রিডে যোগ করবে বছরে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এছাড়া, মাতারবাড়ি, রামপালে চলছে আরও দুটি বড় পাওয়ার প্রোজেক্টের কাজ। এসবের পাশাপাশি মহাজোট সরকারের পায়রা গভীর সমুদ্র বন্দর, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের মতো উদ্যোগ শিল্প সম্প্রসারণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন ডিসিসিআই’র সভাপতি আবুল কাশেম খান।

তিনি বলেন, সরকার এবার যে অবকাঠামো উন্নয়নগুলো করেছে সেটার খুব দরকার ছিল। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সময়মতো যদি বোন স্ট্রাটেজিগুলো না নিতো তাহলে আমাদের পাওয়ারে এই সফলতা কিন্তু আসতো না।

অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মানব সম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র দূরীকরণে মহাজোট সরকারের বিনিয়োগ নিয়মিত বেড়েছে, যার সুফলও আসছে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদ কাজী খলিকুজ্জমান।

তিনি বলেন, গত চার পাঁচ বছরে উন্নয়নের গতি অনেক বেড়েছে। ধারাবাহিকতাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাজের ধারাবাহিকতা, নীতির ধারাবাহিকতা, মানুষকে সম্পৃক্ত করার ধারাবাহিকতা, বিনিয়োগের ধারাবাহিকতা। এটা যদি রক্ষা না হয় তাহলে তো অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়বে মাঝেমধ্যে।

সরকারের দুই মেয়াদে ২০ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২ হাজার ৩০৮ টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন করেছে একনেক। ২০১৭ -১৮ অর্থবছরে উন্নয়ন ব্যয় ছিল ৩ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা যা চলতি অর্থবছর সাড়ে ৪ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানান পরিকল্পনা মন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতে কাজ করবো এবং শিক্ষাখাতে আমাদের ম্যাসিভ রিফর্ম নিয়ে আসতে হবে। এখন যে শিক্ষা তা হয়তো এখনকার প্রয়োজন পূরণ করতে পারবে, কিন্তু আগামী দিনের প্রয়োজন পূরণ করতে পারবে না।

কর্মসংস্থানের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশব্যাপী গড়ে তোলা হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল, যা কাজের সুযোগ দেবে ১ কোটি কর্মক্ষম মানুষকে।