উৎক্ষেপণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের

উৎক্ষেপণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। বাংলাদেশের প্রথম এই কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে যাওয়ার জন্য এখনো প্রস্তুত নয়। দিন-তারিখও নির্ধারণ হয়নি। সুনির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ হলেই তা কেবল গণমাধ্যমকে জানানো হবে।

প্রধানমন্ত্রীর আইটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে এ তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান।

ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোতে অবস্থানরত ড. সিদ্দিকুর রহমান সাংবাদিকদের আরও জানান, শুক্রবার সকালে সজীব ওয়াজেদ জয়ের সঙ্গে তার টেলিফোনে কথা হয়েছে। জয় তাকে জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কবে মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হবে সে ব্যাপারে পরে জানানো হবে।

তিনি জানান, যেহেতু আগে কখনো এ ধরনের অভিজ্ঞতা সংশ্লিষ্টদের ছিল না, এ কারণে তারিখ নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি হয়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুতি চলছে। প্রতিদিনই কোনো না কোনো পরীক্ষা চলছে। সম্পূর্ণ প্রস্তুত চলেই উৎক্ষেপণকারী প্রতিষ্ঠান স্পেস এক্স সরকারকে জানাবে। সেদিন থেকেই বিটিআরসি পরবর্তী প্রস্তুতি নেবে।

শুক্রবার দুপুরে স্পেস এক্স একটি উৎক্ষেপণ পরীক্ষা চালাবে এবং চার ঘণ্টা পর তারা বাংলাদেশ সরকারকে একটি প্রতিবেদন দেবে বলে জানান সিদ্দিকুর রহমান।

এদিকে বিটিআরসির প্রকল্প পরিচালক মেজবাহ উদ্দিন শুক্রবার সকালে টেলিফোনে জানিয়েছেন, তাদের একটি দল দু-একদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন। তারা ফ্লোরিডায় গিয়ে বঙ্গবন্ধু স্যটেলাইটের প্রস্তুতি দেখবেন এবং উৎক্ষেপণের সম্ভাব্য তারিখ নিয়ে কথা বলবেন স্পেস এক্স-এর সঙ্গে।

৭ মের সম্ভাব্য তারিখ আর ঠিক থাকছে না বলে তিনিও জানান।

এর আগে নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ জানিয়েছিলেন, এপ্রিলের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার স্পেস এক্স থেকে এটি উৎক্ষেপণ হবে। পরে ৪ মে সম্ভাব্য তারিখের কথা বলা হয়েছিল। পরে আবার তা পরিবর্তন করে ৭ মের কথা ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, ফ্রান্সের কান টুলুজ ফ্যাসিলিটিতে এই বিশাল প্রকল্পের অন্যতম প্রধান অংশ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটে নির্মাণের কাজ শতভাগ শেষ হয়েছে। স্পেস এক্স এর উৎক্ষেপণযান বা রকেট ফ্যালকন-৯ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটকে মহাকাশে ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত অরবিট প্লটে স্থাপন করবে।

বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা স্যাটেলাইট নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থেলেস এলেনিয়া স্পেস বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটি নির্মাণ করেছে। এটি তৈরির জন্য ২০১৫ সালের ১১ নভেম্বর বিটিআরসির সঙ্গে টার্ন কি পদ্ধতি কোম্পানিটির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট মহাকাশে গেলে নিজস্ব স্যাটেলাইটের অধিকারী বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটবে বাংলাদেশের। এছাড়া এই স্যাটেলাইট স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের যেমন নির্ভরতা কমবে অন্য দেশের ওপর, তেমনি দেশের অভ্যন্তরীণ টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আসবে।