একটি কথাতে কি রাষ্ট্রদ্রোহিতা হয়? প্রশ্ন জাফরুল্লাহর

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, ‘আমি একটা কথা বলেছিলাম, কথাতে শব্দের ভুল ছিল। তাই বলে কি আমি রাষ্ট্রদ্রোহিতা করেছি? আমি তারপরে ভুল স্বীকার করেছি। তার মানে রাষ্ট্র এখন মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। আমাদের চোখে ছানি পড়ে গেছে তাই আসল জিনিসটা দেখতে পাচ্ছি না।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে মুভমেন্ট ফর জাস্টিস নামে নতুন একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিদ্বেষ ও বিভাজনের রাজনীতির পরিবর্তে জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্য নিয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটে এ সংগঠনের।

সংগঠনটির প্রধান সমন্বয়ক সাবেক ছাত্রদল নেতা সানাউল হক নীরু। ১২ দফা লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন চাই। একটি ইতিবাচক গণতান্ত্রিক ও সুস্থধারার রাজনীতির চর্চা চাই।’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমরা গণতন্ত্রের কথা বলছি, কিন্তু গণতন্ত্র গণতন্ত্রহীন হয়ে পড়েছি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে শুধু সংখ্যা দিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে না। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে। জনগণের সামনে উপস্থিত হতে হবে। বিভিন্ন দলের জনগণের সামনে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। কিন্তু আজ সরকারবিরোধী পক্ষকে কথা বলতে দিচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, দেশের এই ক্রান্তিকাল কাটিয়ে উঠতে হলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে হবে এবং নির্বাচনে সবাইকে সমঅধিকারে অংশগ্রহণ করতে দিতে হবে। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলাম, মিটিং-মিছিল করতে যাওয়ার আগে আমাকে আটক করা হলো। হামলা-মামলা করা হলো। এতে তো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।

দেশের বর্তমান সংকট উত্তরণ ঘটাতে ঐক্যের বিকল্প নেই দাবি করে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে আমরা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট করেছি। একটা মাত্র পথ খোলা, গণতন্ত্র যদি চান, শান্তির বাংলাদেশ যদি চান, কল্যাণকর বাংলাদেশ যদি চান তাহলে আপনারা সবাই আমাদের সঙ্গে যোগ দেন, সবাই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেন।’

অনুষ্ঠানে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, ‘আজকে যেটা হচ্ছে এটা ভয়াবহ। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যে শাসনতন্ত্র এটা নির্বাসনে দেয়া হয়েছে, বাস্তবে এটা প্রয়োগ করা হবে না।’

তিনি বলেন, ‘দেখেন, অন্ধ রাজনীতি করতে গিয়ে আমরা আজকে বিভক্ত হয়ে গেছি। কেউ আওয়ামী লীগ করবে, কেউ বিএনপি করবে। ঠিক আছে, দলীয় রাজনীতি আপনারা করেন। কিন্তু ভোটটা ও নির্বাচনটা- এটা সবার। আপনি অবাধ নির্বাচন দেবেন না? তাহলে ভোটটা প্যাকেটে করে দেবে নাকি। এ জন্য এই অবস্থার পরিবর্তন অবশ্যই করতে হবে।’

অনুষ্ঠানে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্যসচিব আবম মোস্তফা আমিন, সাবেক ছাত্র নেতা এনামুল হক শহীদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, সাংবাদিক রিতা রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।