একটি গ্লাস ভেঙে ফেলায় খুন্তির ছ্যাঁকা

দিনাজপুরের বিরামপুরে গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতনের অভিযোগে আকরামুজ্জামান (৬৫) নামে এক সাবেক সেনা সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নির্যাতনের শিকার গৃহপরিচারিকা মোছা. রিমি (১৬) বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসাধীন।

বৃহস্পতিবার গৃহকর্তা আকরামুজ্জামানকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি বিরামপুর উপজেলার আনসার মাঠের পূর্বকণে ইসলামপাড়া গ্রামের মৃত তোজাম্মেল হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় রিমির মা মোছা. ফেন্সি বেওয়া বাদী হয়ে আকরামুজ্জামানকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলা বিবরণে জানা যায়, বিরামপুর উপজেলার একইর মঙ্গলপুর গ্রামের মোছা. ফেন্সি বেওয়ার মেয়ে মোছা. রিমি পারিবারিক অভাব অনটনের কারণে প্রায় ৭/৮ বছর ধরে আকরামুজ্জামানের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করে আসছিল। রিমি বুদ্ধিমত্তায় কিছুটা অপরিপক্ক । র্দীঘদিন ধরে আকরামুজ্জামান কারণে অকারণে গৃহপরিচারিকা রিমিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিলেন। বুধবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে থালা-বাসন পরিষ্কার করার সময় রিমির হাত থেকে পড়ে গিয়ে একটি কাঁচের গ্লাস ভেঙে যায়। এ নিয়ে আকরামুজ্জামান প্রথমে লাঠি দিয়ে রিমিকে মারধর করেন। এ সময় চিৎকার করলে আকরামুজ্জামান রিমির মুখ চেপে ধরে হাতেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেন। এতে তার শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। পরে সে ঘর থেকে বেরিয়ে যন্ত্রণায় বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করলে এলাকার লোকজন এসে রিমিকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আকরামুজ্জামানকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায় এবং রিমিকে বিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করে।

নির্যাতনের শিকার রিমি জানায়, কারণে অকারণে গৃহকর্তা আকরামুজ্জামান প্রায়ই তার ওপর নির্যাতন চালাতো। ঠিকমত খেতে দিত না। এ ঘটনায় সে আকরামুজ্জামানের শাস্তি দাবি করেছে।

এ ব্যাপারে রিমির মা মোছা ফেন্সি বেওয়া বলেন, অভাব অনটনের কারণে বাবা মরা মেয়েটি যাতে পেট পুরে খেতে পারে সে জন্য কাজে দিয়েছিলাম। তারা আমার মেয়ের সঙ্গে ঠিকমত দেখা করতে দিত না। মানুষের কাছে খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে মেয়েকে আহত অবস্থায় দেখতে পাই। আমি নির্যাতনকারীর বিচার চাই।

বিরামপুর থানা পুলিশের ভারপ্রোপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা ঘটনার সত্যতা পেয়েছি।