এক ইনজেকশনে অজ্ঞান অন্তঃসত্ত্বা, বাঁচানো গেল না

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলা এবং গাফিলতির কারণে কৃষ্ণা বিশ্বাস কাজল (২৫) নামের এক অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

মির্জাপুর জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলায় কৃষ্ণা বিশ্বাসের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা।

মৃত কাজল বিশ্বাস উপজেলা দেওহাটা এজে উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রয়াত প্রধান শিক্ষক রাধা বল্লভ বিশ্বাসের মেয়ে এবং মানিকগঞ্জের জামশা গ্রামের লিটন সরকারের স্ত্রী।

কাজল বিশ্বাসের স্বজনরা জানান, বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কাজল বিশ্বাস ব্যথা ও বমিভাব নিয়ে মির্জাপুর জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি হন।

সেখানে কাজল বিশ্বাসকে ব্যথা, বমি ও গ্যাস্ট্রিকের ব্যথাসহ চারটি ইনজেকশন দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক রেজওয়ানা পারভীন। পরে কাজল বিশ্বাসকে ইনজেকশন দেন হাসপাতালের এক নার্স। এরপরই কাজল বিশ্বাস অজ্ঞান হয়ে যান।

এ অবস্থায় কাজল বিশ্বাসকে কুমুদিনী হাসপাতালে পাঠান নার্স। কুমুদিনী হাসপাতালের চিকিৎসকরা কাজল বিশ্বাসের ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে দেখতে পান ডায়াবেটিসের পরিমাণ ৩৭ পয়েন্ট। পরে সেখানের চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য কাজলকে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে পাঠান। বারডেম হাসপাতালে নেয়ার পর সেখানের কর্তব্যরত চিকিৎসক কাজল বিশ্বাসকে মৃত ঘোষণা করেন।

কাজল বিশ্বাসের চাচি মির্জাপুর সরকারি সদয় কৃষ্ণ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা আলো রানী বিশ্বাস বলেন, মির্জাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলায় কাজলের মৃত্যু হয়েছে। আমি তাদের বিচার চাই।

মির্জাপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক রেজওয়ানা পারভীন বলেন, আমি ওই ক্লিনিকের খণ্ডকালীন চিকিৎসক। কাজল বিশ্বাসকে চিকিৎসা দিয়ে সন্ধ্যায় বাসায় চলে আসি। পরে কোন নার্স তাকে চিকিৎসা দিয়েছেন এবং কুমুদিনী হাসপাতালে পাঠিয়েছেন তা আমার জানা নেই।

মির্জাপুর জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ডা. আলম বলেন, ঘটনাটি জেনে আমি হতবাক। প্রত্যেক রোগীকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসা দেয়া উচিত চিকিৎসকদের।

টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।