এক কোটি রুপির বিনিময়ে ইভিএম হ্যাকের প্রস্তাব!

বিধানসভা নির্বাচনের আগে কয়েকজন প্রার্থীকে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন ২২ বছর বয়সী কলেজছাত্র শচিন। হাল জমানার রাজনীতির হিসেবে অমন অফার লুফে নেওয়াই অলিখিত নীতি।

কারণ, প্রস্তাবটি ছিল আসন্ন নির্বাচনে ইভিএম (ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন)-এ কারিগরি করে তাদের জেতার পথ প্রশস্ত করা প্রসঙ্গে।
গত ৬ ও ৭ নভেম্বর এসএমএস আকারে ওই প্রস্তাবগুলো পাঠানো হয়েছিল। এর দুইদিন পর হিমাচল প্রদেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দিন ছিল। তবে ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় ফার্গুসন কলেজের ছাত্র শচিন রাঠোরকে দেশদ্রোহ আইনে গ্রেপ্তার করেছে শিমলা পুলিশ। তবে গত ১৭ নভেম্বর তাকে পুনে থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে দেওয়া হয়েছে।

পুলিশকে রাঠোর বলেন, আমার কাছে মনে হয়েছে পয়সা কামানোর এটা একটা সহজ পদ্ধতি যার দ্বারা সরকারি চাকরির (ইউপিএসসি) পরীক্ষায় বসার প্রস্তুতি এবং আমার পড়াশোনার খরচ চালিয়ে যেতে পারবো।

রাঠোর আরও দাবি করেছেন, আম আদমি পার্টির এমএলএ সৌরভ ভরদ্বাজের প্ররোচনায় একাজ করেছেন। প্রসঙ্গত, পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনের পর ইভিএম মেশিনে জালিয়াতির প্রসঙ্গে সরাসরি লাইভ ডেমোন্স্ট্রেশন করেন সৌরভ ভরদ্বাজ।

ভারতের হিমাচল প্রদেশের পুলিশ কর্মকর্তা রঘু তোমর জানান, শচিন বিজেপি ও কংগ্রেসের কয়েকজন বর্তমান বিধায়ককে হিমাচল বিধানসভা নির্বাচন প্রসঙ্গে মেসেজ পাঠান। তিনজন বিধায়ককে তিনি প্রস্তাব দেন- এক কোটি রুপি দিলে তাদের পক্ষে ইভিএম জালিয়াতি করে ফলাফল পাল্টে দেবেন। মেসেজে শচিন নিজেকে হিমাচলের নির্বাচন কমিশনার বলে দাবি করেন।

শিমলার এসপি সৌম্য সম্বাসিবান জানান, তদন্ত চলছে। গ্রেপ্তার যুবক ইভিএম হ্যাকিং বিষয়ে কিছুই জানে না। সে প্রার্থীদের প্রলুব্ধ করতে চেয়েছিল।

পুলিশ জানায়, শচিন এর আগে মহারাষ্ট্র স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসেস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ব্যর্থ হন। এছাড়া একটি নগর নির্বাচনেও জালিয়াতি করার চেষ্টা করেছিলেন শচিন।

প্রসঙ্গত, উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার পর বিরোধীরা ইভিএম জালিয়াতির অভিযোগ এনেছিল। অভিযোগের জবাবে নির্বাচন কমিশন সবার সন্দেহ দূর করতে ইভিএমের নির্মাণ, এই পদ্ধতিতে ভোটদান, ইভিএম মেশিন আনা-নেওয়ার তরিকা জনসমক্ষে প্রকাশ করে। দেশটির তৎকালীন সিইসি নাসিম জায়েদি তখন জানান, ইভিএম মেশিনে কোনো চিপ থাকে না, এতে ডাটা স্টোর করার কোনো কায়দাও নেই যার দ্বারা বাইরে থেকে কেউ মোবাইল ফোন, ব্লুটুথ, ওয়াইফাই বা অন্য কোনো ইন্টারনেট কানেকশনের মাধ্যমে কারচুপি করবে। তাই, এই মেশিনের কর্মপদ্ধতি নিয়ে যারা সাধারণের মনে সন্দেহ তৈরি করছে সেইসব লোক তাদের দাবির সপক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাতে পারবে না। -হিন্দুস্তানটাইমস.কম, জনসত্তা.কম