‘এক জোড়া জুতার যে দাম, ১০ গরুর চামড়ার দামও তা নয়’

বরাবরের মতো এবারও বন্দরনগরী চট্টগ্রামে মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীদের কৌশলে কয়েক ঘন্টা অপেক্ষায় রেখে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কেনা ৪শ টাকার চামড়া আড়ৎদারদের কাছে বিক্রি করা হয়েছে ৬শ থেকে ৭শ টাকা দরে।

জুতা প্রস্তুতকারক ও চামড়া ব্যবসায়ীদের তথ্য থেকে দেখা যায়, বর্তমান বাজারে এক জোড়া ভালো মানের চামড়ার জুতার যে দাম, ১০টি গরুর চামড়ার দামও তা নয়।

ঢাকা থেকে নির্ধারণ করে দেয়া দর অনুযায়ী ২০ বর্গফুটের একটি চামড়ার দাম হওয়ার কথা ৬০০ টাকা। তাও আবার লবণ মিশ্রিত চামড়া। লাভের আশায় মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বাসা-বাড়ি থেকে চামড়া কিনেছেন ৩শ থেকে ৪শ টাকা দরে। কিন্তু মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের কাছে বিক্রি করতে গিয়ে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েন তারা।

মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘মাল যদি ৭০ হাজার টাকার কেনা থাকে সেখানে ৫০ হাজার টাকাও থাকবে না। মানুষ পাড়া মহল্লায় গিয়ে চামড়া কিনছে, তার অর্ধেক দামেও বিক্রি হচ্ছে না।’

আড়ৎদাররা সরাসরি চামড়া না কেনায় মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা পরিবহনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দাম কমাতে ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তার দু’পাশে হাজার হাজার পিস চামড়া নিয়ে বসে থাকতে বাধ্য করে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের।

মাত্র কয়েক ঘন্টা অপেক্ষায় রেখে মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ সাধারণ ব্যবসায়ীদের। তবে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আড়তদাররা।

তারা বলেন, ‘আমরা ট্যানারি থেকে টাকা পাইনি। আমরা কোন সিন্ডিকেট করিনি। চামড়া বিক্রি করে লস, চামড়া কিনে লস।’

চট্টগ্রামের ট্যানারি দু’টি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছে চামড়া বিক্রি করতে হয় এখাকানকার আড়তদারদের। আর ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছে গত বছরের বকেয়া রয়ে গেছে ২০ কোটি টাকার বেশি।