এক যুগেও কেনো শেষ হয়নি বিচার

এক যুগের বেশি সময় পার হলেও শেষ হয়নি ২১ আগস্ট নারকীয় সেই গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার কাজ। ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে মালার ১৯ আসামি। বিদেশে পালিয়ে থাকা এদের কয়েকজনের অবস্থান সম্পর্কে জানা গেলেও মূল আসামিদের কয়েকজনকে আদৌ ফিরিয়ে আনা যাবে কিনা, এ নিয়ে সন্দিহান সংশ্লিষ্টরা।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, এতো দিনেও বিচার শেষ না হওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো- তদন্তকালে ‘জজ মিয়া’ নাটক সাজিয়ে এ মামলাটি বিপথে নেয়ার চেষ্টা হয়েছিল। একপর্যায়ে হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেডের উৎস, মজুদ, সংগ্রহ ও বিতরণ সুনির্দিষ্টভাবে চার্জশিটে না থাকায় তা অধিকতর তদন্তের জন্য যায়। অধিকতর তদন্তে এক বছর ১০ মাস ২৯ দিন লেগেছে।

তিনি জানান, ২০১২ সালের ১৮ মার্চ দ্বিতীয় দফায় অভিযোগ গঠন করা হয়। প্রথম চার্জশিটে আসামি ছিল ২২ জন। অধিকতর তদন্তে আরও ৩০ জন যুক্ত হয়ে মোট আসামি হয়েছে ৫২ জন। মামলায় মোট ৪৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২৫ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া আসামিপক্ষ মামলাটির বিচার কাজ বিলম্বিত করতে এ পর্যন্ত ৫ বার উচ্চ আদালতে গেছেন। এতে ২৯২ কার্যদিবস ব্যয় হয়েছে। আসামিপক্ষ সময়ক্ষেপণের জন্য অনেক সময় অপ্রাসঙ্গিক জেরাও করেছে।

রেজাউর রহমান বলেন, এ মামলার বিচার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি, চলতি বছরের মধ্যেই বিচার এবং নিষ্পত্তিতে পৌঁছাতে পারব।

অন্যদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুর রশীদ মোল্লা বলেন, বর্তমান সরকার ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার মামলাটিকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের কারণেই মূলত বিচারে দীর্ঘ সময় লেগেছে। নতুন করে মামলা তদন্তে নেয়ায়ও মামলার বিচার কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। আর তদন্ত কর্মকর্তার বক্তব্যের বাইরেও কিছু বক্তব্য রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষীদের দিয়ে বলানোর চেষ্টা করেছে- সে কারণেই জেরায় বেশি সময় লাগছে। এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাই শুধু সাত কার্যদিবস সময় নিয়ে তার সাক্ষ্য দিয়েছেন। এখন ওই তদন্ত কর্মকর্তাকে ৫২ জন আসামির পক্ষে যুক্তিসঙ্গত জেরা করতেই দীর্ঘ সময় প্রয়োজন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী অভিযোগ করেন, আসামিদের পক্ষে যারা সাফাই সাক্ষ্য দিতে আদালতে এসেছেন তাদের অনেককে বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। সম্প্রতি মামলায় সাফাই সাক্ষ্য শেষে আদালত থেকে বেরোনোর সময় পুলিশ একজনকে (সাফাই সাক্ষ্যদাতা) গ্রেফতার করে। বিষয়টি তাৎক্ষণিক আদালতকে অবহিত করলে পরবর্তী সময়ে আদালতের হস্তক্ষেপে ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয়া হয়।