এখনও মেলেনি সন্ধান : সিজারের পরিবারে বাড়ছে শঙ্কা

নিখোঁজের তিন দিন পার হলেও সন্ধান মেলেনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথের সহকারী অধ্যাপক মুবাশ্বার হাসান সিজারের। সময় গড়ানোর সঙ্গে তাকে ফিরে পাওয়া নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যেও শঙ্কা বাড়ছে। অভিযোগের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অনুসন্ধান করছে। তবে তারাও এখন পর্যন্ত কোনো আশার আলো দেখাতে পারছে না।
.
সিজারের পরিবারের সদস্যরা তাকে ফিরে পেতে গণমাধ্যমকে আরও সোচ্চার হওয়ার অনুরোধ করেছেন।

সিজারের বাবা মোতাহার হোসেন জানান, তিন দিন হলো তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কী পরিণতি ঘটেছে তার ভাগ্যে, সেটা নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত।

তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকল সংস্থার সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছি। কিন্তু, কারও কাছ থেকে কোনো ক্লু পাচ্ছি না। সত্যি আমরা হতাশ।

সিজারের বোন তামান্না তাসনিম জানান, আমার ভাইয়ের সঙ্গে কারও কোনো শত্রুতা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে এখন পর্যন্ত তার কারও সঙ্গে মনোমালিন্যের খবরও আমরা কখনও পাইনি।

তিনি জানান, নর্থ সাউথে যোগদান করার পর থেকে ক্লাস শেষে ভাই বাসায় চলে আসতেন। জরুরি কোনো কাজ না থাকলে বাইরে বেশিক্ষণ অবস্থান করতেন না। কোনো দল বা সংগঠনের সঙ্গেও তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

তামান্না বলেন, সর্বশেষ মঙ্গলবার বিকেল চারটায় ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল বাবার। তারপর থেকেই তার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ হয়নি।

গণমাধ্যমের প্রতি তিনি অনুরোধ করেন, ভাইকে ফিরে পেতে মিডিয়ার প্রয়োজন। মিডিয়া সচেতন হলে ভাইকে সহজেই ফিরে পাবেন বলে আশাপ্রকাশ করেন তামান্না।

খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, মুবাশ্বার হাসান সিজারের সন্ধানে তারা কাজ করছেন। কী কারণে বা কারা তাকে তুলে নিয়ে যেতে পারে, সবদিক বিশ্লেষণ করেই তদন্ত করা হচ্ছে।

তিনি জানান, শিক্ষক সিজারের ব্যক্তিগত জীবনের বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার পরিবারের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা নিয়মিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির পলিটিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড সোসিওলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুবাশ্বার হাসান সিজার মঙ্গলবার নিখোঁজ হন।

ওইদিন সকালে দক্ষিণ বনশ্রীর বাসা থেকে বের হয়ে তার কর্মস্থল নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যান সিজার। সেখান থেকে বিকেলে আগারগাঁওয়ের আইডিবি ভবনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ-টু-আই প্রকল্পের একটি মিটিং শেষে বের হওয়ার পরপরই নিখোঁজ হন তিনি।
ওই ঘটনায় রাজধানীর খিলগাঁও থানায় একটি জিডি (জিডি নং-৪৭১) করেন তার বাবা মোতাহার হোসেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের স্নাতক সিজার এক সময় সাংবাদিকতাও করেছেন। পরে তিনি যুক্তরাজ্যে মাস্টার্স ও অস্ট্রেলিয়ায় পিএইচডি করেন। সিজার সম্প্রতি সমাজে জঙ্গিবাদের বিস্তার নিয়ে গবেষণা করছিলেন বলে জানা গেছে।