এবার ট্রেনে ঈদযাত্রায় স্বস্তি

দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। তাই স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন রাজধানীবাসী। প্রতিবছর ট্রেনে ঈদযাত্রায় যাত্রীরা নানা রকম ভোগান্তির কথা বললেও এবার বলছেন অনেকটা স্বাচ্ছন্দে বাড়ি যেতে পারছেন তারা।

বৃহস্পতিবার সকালে থেকে কমলাপুর স্টেশনে ঘরমুখো যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

ঘরমুখো যাত্রীরা বলছেন, অন্যবারের তুলনায় আজকে বেশ আরামেই ট্রেনে উঠতে পেরেছি। ট্রেনের ভেতরেও তেমন একটা ভিড় নেই। এর আগের ট্রেনগুলোও সময় মত ছেড়ে গেছে। সব মিলিয়ে এবারের ঈদযাত্রায় স্বস্তি পাওয়া যাচ্ছে।

অন্যদিকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গতকালের তুলনায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে স্টেশনে যাত্রীদের খুব বেশি ভিড় নেই। তবে বিকেল থেকে এ ভিড় বাড়তে থাকবে। কারন আজ অফিসে শেষ করে ঈদের ছুটি শুরু হবে। ফলে দুপুরের পর থেকে রাত পর্যন্ত যাত্রীদের ঢল নামতে পারে।

৩ নং প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যাচ্ছিলো উত্তরবঙ্গগামী রংপুর এক্সপ্রেস। আর এই ট্রেনেরই যাত্রী হুমায়ুন কবীর। স্ত্রীকে ঈদ করতে যাচ্ছেন গ্রামের বাড়ি। ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার মুহূর্তেই কথা হয় হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে।

তিনি বলেন, স্টেশনে আসার আগ পর্যন্ত মনে হচ্ছিল ঈদযাত্রায় খুব বেশি ভোগান্তি, ভিড় হবে। কিন্তু এখানে পৌঁছে চিত্রটা উল্টো। স্টেশনে খুব বেশি ভিড়। অন্যবার যেমন ট্রেনের ভিতরে পা ফেলানোর জায়গা থাকে না আজ কিন্তু সেই চিত্র নেই। এই ট্রেনও সময়মতই ট্রেন ছেড়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে আজ মনে হচ্ছে স্বস্তির ঈদযাত্রা হবে।

গত ১৩ জুন সারারাত কমলাপুর স্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়ে আজকের (২২ জুন) টিকিটি সংগ্রহ করেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী হাসানুল হক। একতা ট্রেনে দিনাজপুর যাবেন তিনি।

তিনি বলেন, প্রতিবছর প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার জন্য দূরদুরান্ত থেকে নাড়ির টানে শহরের মানুষরা ঘরে ফেরে। কিন্তু ঘরে ফেরা মানুষের ভোগান্তির শেষ থাকে না। তবে আজকে চিত্রটা ভিন্ন, ট্রেনে সবাই নিজ আসনে বসে আছে। স্টেশনেও তেমন একটা ভিড় নেই। বারবার মাইকে ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে দিনাজপুরগামী একতা ট্রেনটি ৫ নং প্ল্যাটফর্ম থেকে সঠিক সময়ে ছেড়ে যাবে। আশা করছি আজকের যাত্রায় আর ভোগান্তি পোহাতে হবে না।

তবে কমলাপুর স্টেশনে কর্মরতরা ধারণা করছেন বিকেল থেকে এ ঘরে ফেরা মানুষের ভিড় বাড়তে থাকবে। আজ বিকেল থেকে শুক্রবার পর্যন্ত ঘরে ফেরা যাত্রীদের ভিড় সবচেয়ে বেশি থাকবে বলে জানান তারা।

ট্রেনে যাত্রীদের নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরার বিষয়ে কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার সিতাংশু চক্রবর্তী বলেন, সকাল থেকেই সব ট্রেন সময়মতই স্টেশন ছেড়ে গেছে। ফরে যাত্রীদের স্টেশনে অপেক্ষা করতে হয়নি। যাত্রীরা যেন নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারেন সেজন্য আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাড়াও রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে। যেকোন ধরনের যাত্রী হয়রানি দেখা গেলেই তা প্রতিরোধ করা হবে। সব ট্রেন নির্ধারিত সময়ে স্টেশন ছেড়ে যেতে আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করছি।

অগ্রিম টিকিটের ট্রেন ছাড়াও ঈদ উপলক্ষে বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এগুলোর মধ্যে আছে-দেওয়ানগঞ্জ স্পেশাল: ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা, ২৩ থেকে ২৫ জুন ও ২৮ জুন এবং ৩ জুলাই। চাঁদপুর স্পেশাল-১: চট্টগ্রাম- চাঁদপুর -চট্টগ্রাম, ২৩ থেকে ২৫ জুন ও ২৮ জুন এবং ৩ জুলাই। চাঁদপুর স্পেশাল-২: চট্টগ্রাম- চাঁদপুর -চট্টগ্রাম, ২৩ থেকে ২৫ জুন ও ২৮ জুন এবং ৩ জুলাই। রাজশাহী স্পেশাল: রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী, ২৩ থেকে ২৫ জুন ও ২৮ জুন এবং ৩ জুলাই। পার্বতীপুর স্পেশাল: পার্বতীপর-ঢাকা-পার্বতীপুর, ২৩ থেকে ২৫ জুন ও ২৮ জুন এবং ৩ জুলাই। সোলাকিয়া স্পেশাল-১: ভৈরববাজার-কিশোরগঞ্জ- ভৈরববাজার, পবিত্র ঈদের দিন। সোলাকিয়া স্পেশাল-২: মংমনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-মংমনসিংহ, ঈদের দিন।