এবার দেশেই কোটি টাকার চিকিৎসা নামমাত্র মূল্যে

আঘাত, রিউমাটয়েড আথ্রাইটিস, হাড়ের ক্ষয়, হাড়ের টিউমার, অস্থিতে রক্ত সঞ্চালন বন্ধসহ অন্যান্য অসুখে যখন কোমর বা হাটুর প্রচণ্ড ব্যথা হয়, হাঁটা-চলা বন্ধ হয়ে যায়, যখন অন্যান্য চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে সুস্থ করে তোলা যায় না, তখন সম্পূর্ণ কোমর ও হাঁটু প্রতিস্থাপন করা হয়। ষাটোর্ধ রোগীদের এটা বেশি করা হলেও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উন্নত ও দীর্ঘমেয়াদী কৃত্রিম অস্থিসন্ধি ব্যবহার করে অল্পবয়সী রোগীদেরও আজকাল কোমর ও হাঁটু প্রতিস্থাপন হচ্ছে।

এটা বিশ্বের সবচেয়ে আধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতি যাতে অপারেশন করে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ডিভাইস বসিয়ে দেওয়া হয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই চিকিৎসায় খরচ পড়ে বিশ-ত্রিশ লাখ টাকা থেকে এক দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত। আশার কথা যে, সবচেয়ে কম খরচে বাংলাদেশে এই চিকিৎসা এখন সম্ভব হচ্ছে যাতে খরচ পড়ছে মাত্র এক থেকে দুই লাখ টাকা। শনিবার রাতে ঢাকার স্থানীয় এক হোটেলে অর্থোপেডিক চিকিৎসকদের নিয়ে ‘বাংলাদেশে কোমর ও হাটু প্রতিস্থাপনের ভবিষ্যত’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের অর্থোপেডিক ও অর্থোপ্লাস্টি সেন্টারের হেড ও চিফ কনসালটেন্ট অধ্যাপক ডা. আমজাদ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাঈদ। এতে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. সৈয়দ সহিদুল ইসলাম, ফ্রান্সের ডা. জিন লুইস ব্রিয়ার্ড, ভারতের ডা. রাজিভ কুমার শর্মা প্রমূখ। রবিবার ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে কয়েকজন রোগীর কোমর এবং হাঁটু প্রতিস্থাপনের অপারেশন সরাসরি দেখানো হয়।

বাংলাদেশী চিকিৎসকদের সাফল্যের সঙ্গে এ ধরনের অপারেশনের ভূয়সী প্রশংসা করে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাঈদ বলেন, ‘দুর্ঘটনাবশত তাঁর নিজের কোমরের হাড় ভেঙ্গে যাওয়ায় কোমর প্রতিস্থাপন করে তিনি এখন বেশ সুস্থ আছেন। ’

কোমর ও হাটু প্রতিস্থাপানের বিস্তারিত দিক তুলে ধরেন অধ্যাপক আমজাদ হোসেন বলেন, ‘মাত্র এক থেকে দুই ঘণ্টার এই অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রোগীকে পুরোপুরি সুস্থ করে তোলা সম্ভব।

এরপরই উঠে বসা, হাঁটা-চলা, ব্যায়াম, সিড়ি ভাঙ্গাসহ সব ধরনের স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারে। ’ তিনি জানান, দরিদ্ররোগীদের জন্য বিনামূল্যেও তারা এসব অপারেশন করছেন।