এবার পাকিস্তানকে ১৭-০ গোলে বিধ্বস্ত করলো বাংলাদেশ

ভুটানের মাটিতে মারিয়া-আঁখিরা আবারও বিধ্বংসী পারফরম্যান্স করল। তাতে উড়ে গেল পাকিস্তান। রবিবার চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে মেয়েদের সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১৭-০ গোলে জিতেছে বাংলাদেশ। দলের প্রায় অর্ধেক গোল করেছেন সিরাত জাহান স্বপ্না, হ্যাটট্রিক করেছেন মার্জিয়াও।

‘বি’ গ্রুপের প্রথম ম্যাচ জিতেই বাংলাদেশ জায়গা করে নিয়েছে সেমিফাইনালে। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াইয়ে পরের ম্যাচে তারা আগামী মঙ্গলবার খেলবে নেপালকে।

দেড় মাস আগে এই ভেন্যুতেই অসাধারণ পারফরম্যান্স করে সাফের ফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশের অনূর্ধ্ব-১৫ দল। কিন্তু ভারতের কাছে হেরে শিরোপা উৎসব করা হয়নি তাদের। তার আগে গ্রুপেও পাকিস্তানের সঙ্গে দেখা হয়েছিল তাদের, যেখানে ১৪-০ গোলের উড়ন্ত জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ।

প্রথম ৪৫ মিনিটে পাকিস্তানের জালে ৮ গোল দেয় বাংলাদেশ। আর পরের ৯টি এসেছে শেষ অর্ধে। সিরাত জাহান স্বপ্না, মার্জিয়া ও কৃষ্ণরানী সরকারের আক্রমণভাগে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে পাকিস্তানের রক্ষণভাগ ও গোলপোস্ট। মাত্র ৭ মিনিটে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। ডানপ্রান্ত থেকে স্বপ্নার বাড়িয়ে দেওয়া পাসে গোলমুখ খোলেন মার্জিয়া। ৩ মিনিট পর শিউলি আজিমের হেড থেকে ডিবক্সে বল পেয়ে সহজেই জালে জড়ান স্বপ্না। ১৩ মিনিটে তিনি মার্জিয়াকে দিয়ে বানিয়ে দেন তৃতীয় গোল। আধঘণ্টা পার না হতেই চতুর্থ গোল আসে মার্জিয়ার একক চেষ্টায়। ২২ মিনিটে একাই বল নিয়ে ঢোকেন তিনি, পাকিস্তানি গোলরক্ষক তাকে ঠেকালেও বল ছুটে যায়। বাঁ পায়ের আলতো টোকায় গোল করেন মার্জিয়া। ৩০ মিনিটে সানজিদা আক্তারের নিচু ক্রস থেকে সরাসরি জালে বল জড়ান স্বপ্না।

দুই মিনিট পর পেনাল্টি পায় বাংলাদেশ, খুব সহজে লক্ষ্যভেদ করে গোলদাতার খাতায় নাম লিখেন ডিফেন্ডার শিউলি আজিম। ৩৭ মিনিটে মিসরাত জাহান মৌসুমী করেন সপ্তম গোল। কৃষ্ণরানীর সহজ চেষ্টা গোলরক্ষক ঠেকালেও ধরে রাখতে পারেননি, সুযোগ পেয়েই গোল করেন অধিনায়ক। বিরতিতে যাওয়ার একটু আগে দলের অষ্টম গোল করেন স্বপ্না। ৪৪ মিনিটে কৃষ্ণরানীর শট ক্রসবারে লেগে ফিরে এলে গোলমুখের সামনে থেকে নিজের চতুর্থ গোল করেন বাংলাদেশি ফরোয়ার্ড।।

দ্বিতীয়ার্ধে গোলের দেখা পেতে বেশ সময় লেগেছে বাংলাদেশের। ১৩ মিনিট আঁখি খাতুনের গোলে শুরু হয় আবারও উৎসব। ৫৮ মিনিটে বক্সের ডানপ্রান্ত থেকে কৃষ্ণরানীর লম্বা ক্রস গোলপোস্টের একেবারে সামনে থেকে হেড করে জালে পাঠান তিনি। চার মিনিট পর কর্নার থেকে মার্জিয়া ও কৃষ্ণরানীর সমন্বিত প্রচেষ্টায় স্বপ্না দলের দশম গোল করেন।

৬৯ মিনিটে দ্বিতীয় পেনাল্টি থেকে দলের ১১তম গোল করেন শিউলি। দুই মিনিট পর আঁখির লম্বা ক্রস থেকে বক্সে বল পেয়ে ফাঁকা গোলপোস্টে নিজের চতুর্থ গোল করেন মার্জিয়া। ৭৩ মিনিটে মাসুরা পারভিনের বাড়িয়ে দেওয়া বল নিয়ে একটু সামনে এগিয়ে ডিবক্সের প্রান্ত থেকে উঁচু শটে আবারও লক্ষ্যভেদ করেন স্বপ্না। পরের মিনিটে ডিফেন্ডারদের কাছ থেকে বল কেড়ে নিয়ে স্বপ্না পাস দেন কৃষ্ণরানীকে। খুব সহজেই দলের ১৪তম গোল করেন তিনি। ক্রসবারে লাগা শট ফিরে এলে ৭৬ মিনিটে স্বপ্না করেন নিজের সপ্তম গোল।

৭২ মিনিটে মৌসুমীর বদলি হয়ে মাঠে নামা তহুরা খাতুন ৮৭ মিনিটে গোল পান। খেলা শেষ হওয়ার মুহূর্তে কর্নার থেকে ছুটে আসা বল জটলার মধ্যে থেকেই জালে জড়ান স্বপ্না।