এবার মিন্নির বাবা-মাকে গ্রেফতারের দাবি রিফাতের বাবার

বরগুনার বহুল আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন নিহত রিফাত শরীফের বাবা মো. দুলাল শরীফ। শুক্রবার দুপুরে বরগুনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে দুলাল শরীফ বলেন, নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির বিয়ের বিষয়টি গোপন করে বিয়ে বলবৎ থাকা অবস্থায় আমার ছেলের সঙ্গে মিন্নির বিয়ে দেয় মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। আমার ছেলের সঙ্গে বিয়ে দেয়ার পরেও মিনি নয়নের বাসায় আসা-যাওয়া করত।

তিনি আরও বলেন, কিশোর যদি তার মেয়ের বিয়ের তথ্য গোপন না করে তার মেয়েকে আমার ছেলের সঙ্গে বিয়ে না দিতো, তাহলে আজ আমার ছেলের এমন অবস্থা হতো না। তাই আমার বিশ্বাস, আমার ছেলের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা ও তার মা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত। এজন্য তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।

দুলাল শরীফ বলেন, মিন্নির বাবা ও মাকে অনতিবিলম্বে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রেফতার করা হোক। তাহলে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে। মিন্নির বাবা মামলার গতি পরিবর্তন করার লক্ষ্যে অন্য সংস্থায় মামলার তদন্ত করার ষড়যন্ত্রে মরিয়া হয়ে উঠেছে। মামলার তদন্ত কার্যক্রম সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে এগিয়ে চলায় মিন্নির বাবা প্রভাবশালী কুচক্রী মহলের ইন্ধনে মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে ষড়যন্ত্র করছে।

এর আগে গত ১৩ জুলাই (শনিবার) রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ পুত্রবধূ মিন্নিকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছিলেন নিহত রিফাত শরীফের বাবা মো. দুলাল শরীফ। এর তিনদিন পর ১৬ জুলাই (মঙ্গলবার) পুলিশ মিন্নিকে গ্রেফতার করে। পরে আদালতে মিন্নি তার স্বামী রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দী দেন।

এদিকে গত বুধবার (২৪ জুলাই) রিফাত শরীফ হত্যায় গ্রেফতার রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীকে পরিকল্পনাকারী উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলন করেন মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর।

সংবাদ সম্মেলনে মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, হত্যাকাণ্ডের আগে রিফাতের সঙ্গে বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী সামসুন্নাহার খুকির বাগবিতণ্ডা হয়। বাকবিতণ্ডার বিষয়টি সামসুন্নার খুকি তার বোনের ছেলে দুই রিফাত ফরাজী ও রিশান ফরাজীর কাছে নালিশ করেন।

যেদিন হত্যাকাণ্ডটি সংগঠিত হয়, সেদিন রিফাত ও রিশান ফরাজী বলেছিল, ‘তুই আমার মাকে গালাগাল করেছিস। আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বল।’

রিফাত ও রিশান ফরাজী সামসুন্নাহার খুকিকে মা বলে ডাকতেন জানিয়ে মোজাম্মেল হোসেন কিশোর বলেন, আমার ধারণা বাগবিতণ্ডার প্রতিশোধ নিতেই রিফাত ও রিশান ফরাজী রিফাত শরীফকে হত্যার পরিকল্পনা করে ও হত্যাকাণ্ডের অগ্রভাগে থাকে। সামসুন্নাহার খুকির সঙ্গে রিফাত শরীফের বাগবিতণ্ডার বিষয়টি রিফাত শরীফ ও মিন্নি তাকে জানিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।

মিন্নিকে গ্রেফতারের পর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে পুলিশ জবানবন্দি নিয়েছে এমন অভিযোগ করে মিন্নির বাবা বলেন, প্রভাবশালী মহলকে বাঁচাতে পুলিশ আমার মেয়ে মিন্নিকে ফাঁসাচ্ছে। তাই এ মামলার তদন্ত পিবিআইতে হস্তান্তরের আবেদন জানাচ্ছি।