এবার সাভারে ব্লু-হোয়েল তরুণীর সন্ধান!

তানিয়া আক্তার। রাজধানীর শ্যামলীর পিসি কালচার এলাকার একটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতালে কাজ করেন। স্থানীয়ভাবে একটি ফিজিওথেরাপির চেম্বারও রয়েছে তার।

পরিবারিকভাবে একটি কন্যা সন্তানের জননী হলেও গত কয়েক বছর হলো স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় বাবা-মায়ের সঙ্গেই সাভার পৌর এলাকার ইমান্দিপুর মহল্লায় বসবাস করতেন তানিয়া। মেয়েটি তার বাবার কাছে থাকায় তিনি কিছুটা হতাশাগ্রস্ত ছিলেন।

এক পর্যায়ে সাভারের ওই তরুণীই ব্লু-হোয়েল গেমে আসক্ত হয়ে পড়েন। অর্ধেকেরও বেশি ধাপ খেলে ফেলা এ তরুণীর অস্বাভাবিক আচরণে সন্দেহ হলে পরিবারের সদস্যরা শুক্রবার বিকালে তাকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে সাভারের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করে।

এ ঘটনার পর হাসপাতাল ও এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে শনিবার সকালে তাকে অন্যত্র সরিয়ে নেয় পরিবারের লোকজন।

শনিবার বিকালে তিনি স্বীকার করেন, তার মোবাইলের ইমু অপশনে তিনি এই গেমের লিংক পান। প্রথমে কিছুটা আনন্দ পান। পরে তিনি আসক্ত হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে তিনি নিজের শরীরের বিভিন্ন স্থান কাটেন।

তানিয়া জানান, তার এক বন্ধুর সহায়তা নিয়ে তিনি এই গেম থেকে বেরিয়ে এলেও অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে পরিবারের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

তিনি বলেন, কৌতূহল থেকে গেমটি খেলতে শুরু করলেও পরবর্তীতে এর ভয়াবহতা বুঝতে পারেন। তবে গেম থেকে বের হয়েও আসতে পারছিলেন না তিনি। এরই মধ্যে ধাপে ধাপে খেলে ফেলেছেন ৩৯টি ধাপ।

তবে পরিবারের সদস্যদের কারণে গেমটির সবকিছু বাস্তবায়ন করতে পারছিলেন না তিনি।

ল্যাবজোন প্রাইভেট হাসপাতাল চিকিৎসক ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, তানিয়া আক্তার ব্লু-হোয়েল গেমে আসক্ত হয়ে প্রথমে তিনি পেটে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও তার হাতের বিভিন্ন স্থানে কাটার চিহ্ন ছিল।

পরিবার থেকে জানানো হয়, শুক্রবার দুপুরে অসুস্থ ওই তরুণীর আচরণ সন্দেহের সৃষ্টি করলে তাকে সাভারের ল্যাব জোন প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই শুরু হয় তার চিকিৎসা।

খবর পেয়ে সাধারণ মানুষ ওই হাসপাতালে ভিড় জমায় তাকে দেখতে। এজন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার কথা বলে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।

তবে যুগান্তরকে তানিয়া জানান, তিনি গেম থেকে বেরিয়ে এসেছেন। এখন তিনি কিছুদিন গ্রামের বাড়ি বরিশাল থাকবেন।