এবার সিলেটে অনুষ্ঠানস্থলে লাঞ্ছিত মোকাব্বির খান

সিলেটে বিএনপি ও মহিলা দল নেতাদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন সিলেট-২ আসনের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান। বৃহস্পতিবার তিনি সিলেট জেলা পরিষদে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যান। সেখানে গিয়ে দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নেয়ায় বিএনপি ও মহিলা দলের নেতাদের রোষানলে পড়েন মোকাব্বির খান। পরে অপমানিত ও লাঞ্ছিত হয়ে অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য হন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সিলেট জেলা পরিষদে বেলা ১১টায় আইডিয়া নামক একটি এনজিও সংস্থার উদ্যোগে ‘ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসেইনসহ বিশিষ্ট রাজনীতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান চলাকালে হঠাৎ গণফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান এমপি সেখানে উপস্থিত হন। তখনই উপস্থিত অতিথিদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। বিএনপি নেতারা তখন আইডিয়া কর্তৃপক্ষকে ডেকে আনেন এবং মোকাব্বির খানকে অনুষ্ঠান থেকে বের করে দেয়ার অনুরোধ জানান। এ অনুরোধে আইডিয়া কর্তৃপক্ষ মোকাব্বির খানকে হল থেকে বের করে দেন। এ সময় মহিলা দল নেতারা তাকে লাঞ্ছিত ও অপমান করেন।

এ ব্যাপারে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ বলেন, কোনো বেইমানের সঙ্গে আমরা অতিথি হতে পারি না। বেইমানের কোনো ধর্ম নেই, সমাজ নেই। বেঈমান শুধু বেইমান-ই। তাই মোকাব্বির খানকে অনুষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া হয়েছে।

গত ২ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় জাতীয় সংসদ ভবনে শপথ নেন মোকাব্বির খান। তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

এরপর থেকে আলোচিত ও সমালোচিত হতে থাকেন মোকাব্বির খান। কেন্দ্রীয় নেতারা তাকে বেইমান বলে আখ্যায়িত করেন।

এর আগে ৭ মার্চ শপথ নেয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে ৬ মার্চ সন্ধ্যায় সিদ্ধান্ত পাল্টান মোকাব্বির খান। দলীয় চাপের মুখে তিনি তার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। তবে ওই দিন অর্থাৎ ৭ মার্চ শপথ নেন গণফোরামের আরেক সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ।

প্রসঙ্গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে গণফোরামের প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোকাব্বির খান। তিনি সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে পরাজিত করে জয়ী হন। এই আসনে প্রথমে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছিল বিএনপির নিখোঁজ নেতা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা। তার মনোনয়ন বাতিল হলে মোকাব্বিরকে সমর্থন দেয় ঐক্যফ্রন্ট।