এবার সেই রাক্ষসদের রুখতে হবে : ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানে রিয়াজ

চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি পঁচাত্তরে আমাদের জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করেছে, এর পরে জাতীয় চার নেতাকে তাঁরা হত্যা করেছে। আমাদের বঙ্গবন্ধুকন্যাকে ১৯ বার হত্যার চেষ্টা করেছে৷ এই চক্র বিভিন্ন সময় তাদের নাম এবং পোশাক পাল্টেছে৷ কিন্তু চেহারাটা একই আছে ৷

রিয়াজ বলেন, আজকে আমি যখন চোখ বন্ধ করে তাদেরকে দেখি, সেই বড় বড় দাঁত ও চোখওয়ালা রাক্ষসের মতো একটাই চেহারা ভাসে আমার চোখে৷ তারা সবাই এখন এক হয়েছে ৷ সেই রাক্ষসদের রুখতে হবে এবার ৷

ছাত্রলীগের উদ্যোগে ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদে’র ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আয়োজিত ‘প্রগতির মঞ্চে বিজয়ের স্বরলিপি’ শীর্ষক ছয় দিনব্যাপী মুক্ত আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোক উৎসবে এসব কথা বলেন রিয়াজ। তিনি উৎসবের তৃতীয় দিনের আয়োজনে গতকাল শুক্রবার রাতে এসেছিলেন। ২৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই আয়োজন শেষ হওয়ার কথা আগামী ৩১ ডিসেম্বর ৷

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে রিয়াজ বলেন, ‘আমরা একটা দীর্ঘ সময় পার করে এসেছি যখন আমাদের একটা ভুল ইতিহাস পড়ানো হয়েছে ৷ সব সময় আমাদের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে ৷ স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি আমাদের মাথার মধ্যে অনেক রকম বাজে তথ্য দিয়েছে ৷ কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যখন আমরা বই-পুস্তক পড়া শুরু করলাম এবং চারপাশে তাকিয়ে দেখলাম, তখন লক্ষ করলাম কী নির্মমভাবে অনেক প্রজন্মের মাথার মধ্যে এই বিষাক্ত পোকা ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷’

ছাত্রলীগের উদ্যোগে এই আয়োজনে এসে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে চিত্রনায়ক ফেরদৌস বলেন, ‘কাল আমাদের সংসদ নির্বাচন ৷ এখানে প্রত্যেকে সুশিক্ষিত ভোটার ৷ তোমাদের বিবেক-বুদ্ধি-বোধ দিয়ে যারা সঠিক, যারা মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে ছিল, আছে এবং থাকবে, যারা থাকলে দেশ আরও সামনের দিকে এগিয়ে যাবে, তাদেরই ভোট দেবে ৷ তোমরা যে এত রাত অবধি ছেলে-মেয়েরা মিলে টিএসসিতে প্রোগ্রাম করছ, এটা একসময় কল্পনা করা যেত না ৷ নানা দুর্ঘটনা ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটত ৷ কিন্তু গত ১০ বছরে সেটা হয়নি ৷ সেটা যেন না হয়, তাই আমরা সেই সরকারকেই ক্ষমতায় আনব।’

ফেরদৌস বলেন, ‘বাংলাদেশের একটা প্রজন্ম ২১ বছর অন্ধকারে ছিল ৷ আমরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতাম না ৷ কিন্তু এখন আর সেই সময় নেই ৷ এখন এই ডিজিটাল যুগে বসে আমরা সবকিছু হাতের মুঠোয় দেখে নিতে পারি, জানতে পারি আমাদের প্রকৃত ইতিহাস ৷ আজকে আমরা ভোট বা প্রচারের কথা বলব না ৷ সবাই জানো, আমি আর রিয়াজ প্রচার কমিটিতে আছি ৷ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের দুজনকে জাতিসংঘে নিয়ে গিয়েছিলেন ৷ এতক্ষণ আমি যাদের কথা বলেছি, আমরা যাদের হয়ে কাজ করছি, নিশ্চয়ই তোমরা বুঝে গেছ ৷ পরশুদিন নিজের মূল্যবান ভোটটি স্বাধীনতার পক্ষের শক্তিকে দেবে ৷ বড় ভাই হিসেবে এটা আমার অনুরোধ থাকবে সবার প্রতি ৷’

প্রতিদিন পৃথক প্রতিপাদ্যে ছয় দিনব্যাপী এই আয়োজন চলছে ৷ প্রতিপাদ্যগুলো যথাক্রমে ‘শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও প্রযুক্তি’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ’, ‘এ দেশে আর জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ ফিরবে না’, ‘সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির দশ বছর’, ‘আগামীর বাংলাদেশ’ ও ‘আলোক উৎসব’ ৷ প্রতিদিন বিকেল চারটা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত এই আয়োজন চলছে ৷ আগামী ৩১ ডিসেম্বর ‘আওয়ামী লীগের জয়ে’ বিজয় মিছিল ও আলোক উৎসবের মধ্য দিয়ে এই আয়োজন শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ৷