এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ৬০০ কোটি ব্যাংকে জমা, হদিস নেই মুনাফার

সরকারের দেয়া টাকা খরচ হয়নি। আবার ফেরতও যায়নি কোষাগারে। জমেছে ব্যাংক হিসাবে। তবে সেই টাকার মুনাফা কোথায় যাচ্ছে তা কেউ জানে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গোয়েন্দা জালে ধরা পড়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এমন তুঘলকি কা-। গত কয়েক বছরে এভাবে জমেছে ৬০০ কোটি টাকারও বেশি। অর্থ মন্ত্রণালয় এ ঘটনাকে দেখছে বড় ধরনের অপরাধ হিসেবে। যদিও শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রধানের দাবি, এটি স্বাভাবিক ঘটনা।

দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৯৭ শতাংশই বেসরকারি। সংখ্যায় যা অন্তত ২৮ হাজার। এর প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক-কর্মচারিকে মাসে বেতন ভাতা দেয়া হয় সরকারি কোষাগার থেকে যা পরিচিত এমপিও নামে।

এই খাতে বছরে খরচ হয় প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। যা দেয়া হয় রাষ্ট্রীয় চার ব্যাংক- সোনালী, রূপালী, জনতা এবং অগ্রণীর মাধ্যমে। তবে প্রতি বছরই অন্তত ৭০ কোটি টাকা খরচ না হওয়ায় পড়ে থাকে ব্যাংক হিসাবেই। এই টাকা সরকারি কোষাগারে ফেরত দেয়ার কথা থাকলেও নিয়মের তোয়াক্কাই করেনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

সম্প্রতি এই অনিয়মই ধরা পড়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনে। গত কয়েক বছরে এই জমে থাকা টাকার পরিমাণ ঠেকেছে ৬১৪ কোটিতে। এক বছরে যা থেকে শুধু মুনাফাই আসে, ৩০ কোটি টাকা। মূল টাকা ব্যাংকে পড়ে থাকলেও, মুনাফার টাকা কোথায় যায়, তার হদিস নেই কারো কাছে। এমন ঘটনাকে রীতিমতো বড় ধরণের অপরাধ বলে মনে করছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের চোখে যা অপরাধ তা অবশ্য স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসাবেই দেখছেন মাউশির মহাপরিচালক। মুনাফার টাকা খরচের প্রশ্নেও সদুত্তর মেলেনি তার কাছে। মন্ত্রণালয়ের প্রশ্নের মুখে পড়ে, হিসাবের হালনাগাদ জানতে ব্যাংকগুলোতে চিঠি দিয়েছে অধিদপ্তরের পরিচালক। তবে নতুন যোগ দেয়ার অজুহাতে বিস্তারিত জানেন না বলেই দায় সেরেছেন। এমন অনিয়মে ক্ষোভ ঝরেছে অর্থ প্রতিমন্ত্রীর কণ্ঠেও। নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থার নেয়ারও হুশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

২০০৮ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ও বিষয়টি নজরে এসেছিলো। তখন জমে থাকা ১০০ কোটি টাকা ফেরতের উদ্যোগও নেয়া হয়েছিলো। তবে সরকার পরিবর্তনের পরপরই ফাইল চাপা পড়ে যায় সব উদ্যোগ। সূত্র : চ্যানেল ২৪