এরশাদের কবরের জন্য ৫ কোটি টাকা, দুই বিঘা জমির প্রস্তাব

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কবরস্থান কোথায় হবে তা নিয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি দলটির শীর্ষ নেতারা।

বুধবার দুপুর ৩টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জাপার প্রেসিডিয়াম ও এমপিদের যৌথসভায় তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি কোথায় হবে এরশাদের কবর।

দলটির এক নেতা তার দুই বিঘা জমি এরশাদের কবরের জন্য দিতে চান বলে জানান।

সভায় এরশাদের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা ও কবর কোথায় হবে তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। দেশের বাইরে থেকে ভালো চিকিৎসক আনা যায় কি না তা নিয়েও আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।

সভায় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মামুনুর রশিদ এরশাদের কবরস্থানের জায়গা কেনার জন্য পাঁচ কোটি টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন জাপার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। সভায় জাপার ৩৮ জন প্রেসিডিয়াম ও এমপি উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে দুপুর ১টায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জিএম কাদের জানান, এরশাদের শারীরিক অবস্থার আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে। বুধবার সকালে আমি সিএমএইচে গিয়েছিলাম। তিনি আমার কণ্ঠ শুনে চোখ ও হাত নাড়িয়েছেন।

বিকেলে জাপার যৌথসভার বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সভায় শুরুতেই জিএম কাদের এরশাদের কথা বলতেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। একপর্যায়ে হাউমাউ কেঁদে ফেলেন।

জানা গেছে, সভায় উপস্থিত অধিকাংশ নেতারা এরশাদের কবরস্থান নিজস্ব কেনা জায়গায় ‘পাবলিক প্লেসে’ করার পক্ষে মতামত দেন।

যদিও কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য দাবি করেন, এরশাদ সেনানিবাস অথবা আসাদগেটের বিপরীতে সংসদ প্রাঙ্গণে তার কবরের কথা বলেছেন।

সভায় পার্টির নেতারা এর বিরোধিতা করে বলেন, এরশাদ দেশের সতেরো কোটি মানুষের নেতা। তার কবরস্থান যদি সেনানিবাসে হয় তাহলে সাধারণ মানুষ তার কবরস্থান জিয়ারত করতে যেতে পারবে না।

সভায় জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সফিকুল ইসলাম সেন্টু মোহাম্মদপুর আদাবরে জায়গা কেনার প্রস্তাব দেন।

অন্যদিকে আলোচনা সভায় জাপা প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘আদাবরে না পাওয়া গেলে সাভারে আমার নিজস্ব জায়গা থেকে দুই বিঘা জায়গা এরশাদের কবরস্থানের জন্য লিখে দেওয়া যেতে পারে।

এরপর প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মামুনুর রশিদ পাবলিক প্লেসে এরশাদের কবরস্থান করার দাবি জানিয়ে বলেন, নেতা এরশাদের কবরস্থানের জন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে পাঁচ কোটি টাকা দেব।

তিনি আরো বলেন, স্যারকে যদি চিকিৎসার প্রয়োজনে বিদেশে নেয়া হয়, এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের যাবতীয় খরচও আমি বহন করব।

সভায় আরো বক্তব্য রাখেন এম এ সাত্তার, সাহিদুর রহমান টেপা, শেখ মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম, সুনীল শুভ রায়, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এটিইউ তাজ রহমান, আজম খান প্রমুখ।

সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, এরশাদের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে।

রাঙ্গা বলেন, এরশাদের মূলত মাইলিড প্লাস্টিক সিনড্রোম রোগে আক্রান্ত।

সভায় বাইরে থেকে চিকিৎসক আনার বিষয়েও সভায় আলোচনা হয় বলেও জানান তিনি।