এরশাদ সিএমএইচে

হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে গেছেন। যদিও দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

রবিবার দুপুরে গুরুতর সাবেক রাষ্ট্রপতিকে সিএমএইচে নেয়া হয় বলে জাতীয় পার্টির একজন শীর্ষ নেতা নিশ্চিত করেছেন।
ওই নেতা বলেন, এরশাদ বেশ কিছুদিন ধরেই শারীরিকভাবে অসুস্থ। গত শনিবারের মহাসমাবেশে তিনি চেয়ারে বসে বক্তব্য রাখেন অসুস্থতার জন্যই।

জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং এরশাদের প্রেস উইংয়ের প্রধান সুনীল শুভ রায় বলেন, ‘গলফ খেলতে গিয়ে হাঁটুতে ব্যথা পেয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওনি এ কারণে কয়েকদিন ধরেই হাঁটতে পারছিলেন না। ডাক্তার বলেছেন, কমপ্লিট রেস্ট দরকার। যেহেতু বাসায় গেলে হাঁটাহাঁটি করা যায় না, তাই স্যারকে দুই দিন হাসপাতালেই রাখা হচ্ছে।’

৯০ ছুঁই ছুঁই এরশাদ ডায়াবেটিকসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন। তার দুটো ভাল্বেই ছিদ্র রয়েছে। তিনি সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে রুটিন চেকআপ করতেন।

জানতে চাইলে এরশাদের উপপ্রেস সচিব খন্দকার দেলোয়ার জালালী বলেন, ‘গতকাল স্যার একটু অসুস্থ ছিলেন। সিএমএইচে চেকআপে গিয়েছিলেন। আরও চেকআপ প্রয়োজন বলে আজকে আবার গিয়েছেন। তবে তিনি সেখানে ভর্তি হননি।’

জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘আমরা এই বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলব; তবে সময় হয়নি বলে…। এরশাদ স্যারের শরীরের অবস্থা খুব ভালো হাসপাতাল থেকে এই মাত্র আসলাম। মেডিকেলে চেকআপে গিয়েছিল তখন প্রেসার একটু লো ছিল। এটা তার নিয়মিত চেকআপ।’

‘তিনি ছোটখাটো হলেও দেশে অথবা সিঙ্গাপুর যান ডাক্তার দেখাতে। তবে এমন কোন কিছু হয়নি যে এটা নিয়ে নতুন করে চিন্তা করতে হবে। তার জীবন ব্যবস্থায় সংশয় নেই, ভালোই আছেন তিনি। আমি দেখে আসলাম, কথা বলে আসলাম। ম্যাডাম (রওশন এরশাদ) দেখে আসলেন। তিনি নিজ হাতে খাওয়াইলেন স্যারকে।’

জাপা চেয়ারম্যান কবে নাগাদ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেতে পারেন- জানতে চাইলে হাওলাদার বলেন, ‘দুই একদিনের মধ্যেই পাবেন।’

১৯৩০ সালে জন্ম নেয়া এরশাদ ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগেও সিএমএইচে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে সে সময় তাকে নিয়ে যায় র‌্যাব। যদিও এরশাদের সে সময়ের অসুস্থতা নিয়ে নানা প্রশ্ন ছিল।

নির্বাচনের আগে আগে এরশাদ ভোটে যাবেন না ঘোষণা দিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতে তার দলের নেতাদেরকে নির্দেশ দেন। এই নির্দেশের পর বেশ কয়েকজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করলেও এরশাদ পত্নী রওশন এরশাদের নেতৃত্বে দলের একটি অংশ নির্বাচনে যায়। অনিচ্ছা সত্ত্বেও রংপুর সদর আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। ভোটের দিনেও সিএমএইচে ছিলেন এরশাদ।

গত শনিবারের মহাসমাবেশে এরশাদ ‘গুরুত্বপূর্ণ বার্তা’ দেন। বলেন, আগামী নির্বাচন অনিশ্চিত। তবে তিনশ আসনে ভোটের জন্য তার দল প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।

পাঁচ বছর আগে এরশাদের হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে গুঞ্জনের বিষয়ে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘না …. যেটা আগে বলেছি সেটা থাকবে। গনতান্ত্রিক চর্চায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অবস্থান সুদৃঢ়।’