ঐক্যে আওয়ামী লীগকেও স্বাগত জানাবে বিএনপি, তবে…

‘আওয়ামী লীগ ছাড়া জাতীয় ঐক্য হবে না’ ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের জন্য ক্ষমা চেয়ে জনগণ যে ৫টি ইস্যুতে ঐকমত্য হয়েছে তাতে একমত হওয়ার ঘোষণা দিলে আওয়ামী লীগকেও বিএনপির জাতীয় ঐক্যে স্বাগত জানানো হবে। কিন্তু তারা এটা পারবে না। এটা তাদের কথার কথা। মানুষ তো তাদের অনাচারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। তাদের নিয়ে সংগ্রাম হয় কীভাবে?’

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক প্রতিবাদ সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলসহ সব রাজবন্দির মুক্তি দাবিতে ‘নাসির উদ্দিন আহমেদ স্মৃতি সংসদ’ এ প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।

জনগণের ঐক্য দেখে বর্তমান সরকার আতঙ্কে আবোল-তাবোল বলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে, নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীকে মাঠে নামাতে হবে, ইভিএম প্রয়োগ করা যাবে না এসব দাবিতে জনগণ একমত হয়েছে। জনগণের এই ঐক্যে সরকার ভয়ে আছে। জনগণকে মোকাবেলা করার মানসিক শক্তি ও সাহস তাদের নেই। এজন্য তারা আবোল-তাবোল বলছে।’

ড. মোশাররফ বলেন, ‘শুধু জনগণ নয়, বন্ধুরাষ্ট্রগুলো আমাদের দেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়। আর খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণ ছাড়া দেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না এটা প্রমাণিত।’

সরকারের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে যেখানে সবার জন্য সমান সুযোগ থাকার কথা সেখানে সরকার ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের আটক করে কোণঠাসা করে রাখা হচ্ছে। তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী বেগম খালেদা জিয়াকে ভয় পায়, বিএনপিকে ভয় পায়, এজন্য বেগম খালেদা জিয়াকে সাজানো মামলা দিয়ে আটক রাখা হয়েছে, তার সুচিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না। আমাদেরও যে কোনো সময় নিয়ে যেতে পারে।’

ক্ষমতাসীনদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জনগণের সঙ্গে আর প্রতারণা করা যাবে না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন এদেশে আর হতে দেয়া হবে না।’

তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে আজ আমরা উদ্বিগ্ন, জাতি উদ্বিগ্ন। তার আশু মুক্তি প্রয়োজন। তার মুক্তি হলে তিনি ইচ্ছেমতো উন্নত চিকিৎসা নিতে পারবেন।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে ‘কালাকানুন’ উল্লেখ করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, গণতান্ত্রিকপন্থায় জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে এসব কালাকানুল থেকে মুক্তি মিলবে। এজন্য সবাইকে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাইফুর রহমান নান্টুর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নির্বাহী সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ বক্তৃতা করেন।