ওয়েব সিরিজে যৌনতা অবাধ নয়, চালু হওয়া উচিত সেন্সর ব্যবস্থা

ওয়েব সিরিজে সবই সিদ্ধ— চূড়ান্ত ভায়োলেন্স থেকে উদ্দাম নগ্নতা— সবই চলতে পারে ওয়েবে। কারণ সেখানে সেন্সরের লাল চোখ অনুপস্থিত। এমন একটা ধারণা আমাদের মনে বেশ থাবা গেড়েই বসে রয়েছে। আর সেই মোতাবেক সারা দেশ জুড়ে ওয়েব সিরিজ হিসেবে যা তোলা হচ্ছে, তাতে প্রদর্শিত হচ্ছে এমন সব দৃশ্য, যা সাধারণ সিনেমা বা টেলি সিরিয়ালে থাকতে পারে না।

কিন্তু সত্যিই কি ওয়েব সিরিজ ‘বন্ধনহীন’? যা খুশি, তা-ই কি দেখানো যেতে পারে এখানে? এই প্রশ্নেই সম্প্রতি সরব হয়েছে বোম্বে হাই কোর্টের নাগপুর বেঞ্চ। বিচারপতি ভূষণ ধর্মাধিকারী এবং বিচারপরতি মুরলীধর গিরাতকর ঘোরতর আপত্তি তুলেছেন ওয়েব সিরিজে যথেচ্ছ নগ্নতা, যৌনতা ও হিংসা প্রদর্শনের বিষয়ে।

এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি আইনজীবী দিব্যা গোন্টিয়া ওয়েব সিরিজে যথেচ্ছ হিংসা ও যৌনতা প্রদর্শনের বিষয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। তাঁর বক্তব্য— নেটফ্লিক্স, আমাজন প্রাইম প্রভৃতি প্ল্যাটফর্মে যে সব ওয়েব সিরিজ প্রদর্শিত হচ্ছে, তার অনেকগুলিতেই পর্নোগ্রাফিক কন্টেন্ট বিদ্যমান। সেই সঙ্গে এগুলিতে ব্যবহৃত হয় অশালীন ভাষা ও অঙ্গভঙ্গী। দিব্যার মতে এইগুলি যা ভারতীয় সংস্কৃতি ও নৈতিকতার পরিপন্থী। সেই সঙ্গে এই সব ওয়েব সিরিজ রাজনৈতিক, সামাজিক ও অন্যান্য সংবেদনশীল বিষয়গুলিতেও সমস্যা সৃষ্টি করে।

দিব্যা জানিয়েছেন, অনেক সময়েই এই ধরনের ওয়েব সিরিজ ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত আনে। যেখানে টিভি, সংবাদপত্র, সিনেমা ইত্যাদির প্রতি নজরদারি করার বন্দোবস্ত রয়েছে, সেখানে ওয়েব সিরিজ ছাড় পাবে কেন?

জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে বিচারপতিরা জানান, এই বিষয়ে কেথাও একটা নির্দেশিকা থাকার প্রয়োজন রয়েছে। জাতীয় অথবা আন্তর্জাতিক, যে কোনও ওয়েব সিরিজ সম্প্রচারের আগে তা আগে স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা একান্ত কাম্য। কোনও সিরিজই অনলাইনে বিনা বিচারে চলে যেতে পারে না, এমনই মন্তব্য করেছেন বিচারপতিরা।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি জাতীয় ও প্রাদেশিক স্তরে এমন কিছু ওয়েব সিরিজ মুক্তি পেয়েছে, যা নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে গণমাধ্যমে। ওয়েব প্ল্যাটফর্মেও চালু হওয়া উচিত সেন্সর ব্যবস্থা— এমন দাবি তুলছেন অনেকেই।