কনকনে ঠান্ডা বাতাসে কাবু ইজতেমার মুসল্লি

শীতের চাদরে ঢাকা পড়েছে সারা দেশ। তীব্র শীতের সঙ্গে যোগ হয়ে কনকনে ঠান্ডা বাতাস। এই বাতাস শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। হাড়ে কাঁপুনি ধরিয়ে দিয়েছে। তীব্র শীতের এই সময়ে রাজধানী ঢাকার তুরাগ তীরে আয়োজন করা হয়েছে বিশ্ব ইজতেমা। সেখানে জড়ো হয়েছেন সকল বয়সী মানুষ।

শনিবার(১৩ জানুয়ারি) রাত পোহালেই ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত। মোনাজাতের আগের দিন প্রথম পর্বের ইজতেমায় যে চিত্র ছিল গতবারে, এবারে তাতে ভাটা পড়েছে। মুসল্লির সমাগম কম। রাস্তায় যানজট নেই। অথচ অন্যান্য বছরগুলোতে এমন চিত্র চোখে পড়েনি। ইজতেমা শুরুর পর থেকেই টঙ্গী, উত্তরা, আশুলিয়ার সড়কগুলোয় ব্যস্ততা বেড়ে যায়।

বিশেষ করে আখেরি মোনাজাতের আগের দিন দুপুর থেকেই ইজতেমা ময়দানের আশপাশে তিলধরার ঠাঁই থাকে না। ময়দান ও আশপাশের এলাকা জনসমুদ্রে রূপ নেয়। এবারে সে রূপ চোখে পড়ছে না। ময়দানে মুসল্লির সমাগম থাকলেও রাস্তা অনেকটাই ফাঁকা।

ভোলা লালমোহন থেকে জামাত নিয়ে এসেছেন নুরুল ইসলাম। তিনি জানান, আমাদের প্রস্তুতির কোনো ঘাটতি ছিল না। বছর ধরে মেহনত করে থাকি বিশ্ব ইজতেমার জন্য। এবারে ভোলা থেকে যত জনকে টার্গেট করেছিলাম, তা পূরণ হয়নি। শীতের কারণেই সম্ভব হয়নি।

ইজতেমার শুরুর দিনই লক্ষ্মীপুর থেকে এসেছেন, বোরহান প্রামাণিক। তার জামাতে ৪০ জন মুসল্লি যোগ দেয়ার কথা ছিল। এসেছেন মাত্র ১৫ জন। বলেন, মুরুব্বিরা বেশিরভাগই আসতে পারেন নাই। এ শীতে জোর তাগিদও দেয়া যায়নি। যারা পারছেন, তারাই এসেছেন।

ইজতেমার মাঠে প্রবেশ দ্বারের কাছেই টুপি, জায়নামাজের দোকান দিয়েছেন ইসহাক বেপারি। বলেন, ৩০ বছর থেকে ব্যবসা করছি। দিন দিন মানুষ বাড়ছিল। দুই পর্ব হওয়ার পরেও এত কম মুসল্লি হয়নি। মোনাজাতের আগের দিন পা রাখার জায়গা থাকে না। অথচ আজ বিকেল বেলাতেও ফাঁকা। শীতের কারণেই মানুষ কম এসেছেন। আবার মাওলানা সাদকে নিয়ে যে বিতর্ক তার কারণেও হয়ত অনেকে আসেনি।

বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে গত বুধবার ঢাকায় আসেন মাওলানা মোহাম্মদ সাদ। কিন্তু বিতর্কিত ও আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে সমালোচিত মাওলানা সাদ ওই দিনই বিমানবন্দরে তাবলিগ জামাতের একাংশ ও আলামা-ওলামাদের বিক্ষোভ মুখে পড়েন।

মাওলানা সাদ কান্ধলভী তার নিজের বিতর্কিত বক্তব্য প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তাকে ইজতেমা ময়দানে যেতে দেয়া হবে না বলে জানান বিক্ষোভকারীরা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তায় ওই দিন বিকেলে তাকে কাকরাইলে নেয়া হয়। শুক্রবার তিনি এ মসজিদে জুমার নামাজে বয়ান করেন। শনিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মাওলানা মোহাম্মদ সাদ তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে ঢাকা ছাড়েন।

রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। ৪ দিন বিরতির পর ১৯ জানুয়ারি শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।