কবি নজরুলের সমাধিতে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। শনিবার সকাল সাড়ে সাতটায় সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে রাজধানীতে কবির জন্মবার্ষিকী পালনের সূচনা ঘটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গ জাতীয় কবির সমাধিতে পুস্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির সমাধিতে সকাল সোয়া সাতটায় পুস্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জমানসহ শিক্ষক ও কর্মচারীরা। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল, হল সংসদ, শিক্ষক সমিতিসহ ছাত্রছাত্রীরা কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

পরে সরকারী ও বেসরকারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সংগঠন ও সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ পুস্পার্ঘ্য অর্পণ করে কবির প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। তারা হলো,সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলা দেশ আওয়ামী লীগ, মহানগর আওয়ামী লীগ, আওয়ামী যুব লীগ, ছাত্র লীগ, বাংলাদেশের কমিউিনিষ্ট পার্টি, বাসদ, বিএনপি, জাসদ, বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, জাতীয় প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর, নজরুল ইন্সটিটিউট, নজরুল একাডেমি, মানিকগঞ্জ সমিতি-ঢাকা, ঢাবি নজরুল গবেষণা কেন্দ্র, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, জয়বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট, বঙ্গবন্ধু কবিতা পরিষদ, কবি সুফিয়া কামাল হল, সূর্যসেন হল, রোকেয়া হল ছাত্রী সংসদ, ডাকসু, বঙ্গবন্ধু শেখ মুবিবুর রহমান হল ছাত্র সংসদ, নজরুল সংগীত শিল্পী সংসদ, এফ রহমান হল ও ঋষিজ।

এদিকে সকাল সাড়ে আটটায় জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের উদ্যোগে সমাধি প্রাঙ্গণে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিতত্ব করেন ঢাবি উপাচার্য ড. মো: আখতারুজ্জামান।

উল্লেখ্য, ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন কাজী নজরুল ইসলাম। ডাক নাম দুখু মিয়া। শৈশবেই বাধাগ্রস্ত শিক্ষাজীবন, জীবিকার টানে কাজ করেছেন মসজিদ-মক্তবে।

কৈশোরে লেটো গানের দলে পালাগানের রচয়িতা ও অভিনেতা ছিলেন। সেখান থেকেই শিল্প চর্চার শুরু। পরিচয় হয় হিন্দু পুরাণের সঙ্গে। চাষার সঙ, শকুনিবধসহ বেশকিছু লোকসঙ্গীত রচনা করেন কিশোর নজরুল। একদিকে মসজিদ-মক্তবের জীবন উল্টোদিকে লেটো দলের বিচিত্র অভিজ্ঞতা নজরুলের সাহিত্যে এনেছে বৈচিত্র্য। ১৯১৭ সালে যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। পরে পেশা হিসেবে বেছে নেন সাংবাদিকতা।

ব্রিটিশ শোষনের বিরুদ্ধে সোচ্চার নজরুলের লেখনীতে ছড়িয়েছে বিদ্রোহ। জেলে বন্দী হয়েও লিখেছেন রাজবন্দীর জবানবন্দী। কবির প্রতিটি শব্দই সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে।

কবি ছিলেন চিরবিরহী। প্রেম, ভালোবাসা আর সাম্যের বাণী সবসময়ই ধ্বণিত হয়েছে কবির কণ্ঠে। ভাতৃত্ব আর সমতা, সঙ্গীতে তুলে ধরেছেন প্রেম, প্রকৃতি আর ভালোবাসার কথকতা।