কলারোয়ায় জামায়াত নেতা আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে আ’লীগ নেতার সংবাদ সম্মেলন

শেখ মোসলেম আহমেদ, কলারোয়া (সাতক্ষীরা): সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একাধিক নাশকতা মামলার আসামী উপজেলার অন্যতম জামায়াত নেতা মাওঃ আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। বুধবার বিকালে কলারোয়া প্রেসক্লাবে উপজেলার জালালাবাদ ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শেখ মোসলেম আহমেদ তার বিরুদ্ধে এ পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেন।

তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন,উপজেলার জালালাবাদ গ্রামের মৃত আব্দুল বারী খানের ছেলে জালালাবাদ মহিলা দাখির মাদ্রাসার সুপার জামায়াত নেতা আব্দুস সাত্তার নিজের কুকর্ম ঢাকতে গত ১০ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আমাকে জড়িয়ে যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা,বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যেপ্রনোদিত। আমি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ওই সংবাদ সম্মেলনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

শেখ মোসলেম আহমেদ সংবাদ সম্মেলনে আরো বলেন, বিগত ২০১৩ সালে সারা দেশের ন্যায় কলারোয়া উপজেলায় জামায়াত-বিএনপি’র নেতৃত্বে ব্যাপক তান্ডব ও নাশকতার সৃষ্টি হয়। এ সব নাশকতায় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সরসকাটির জজ মিয়া, যুগিবাড়ির আজু, ছলিমপুরের বাবু ও দেয়াড়ার রবিউলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বাড়ি ঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগ করে উপজেলা ব্যাপী আতংক সৃষ্টি করা হয়। এমনকি ওই আব্দুস সাত্তারের নেতৃত্বে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসী অস্ত্রধারী ক্যাডাররা আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগ করে। এসব ঘটনায় কলারোয়া থানায় তার বিরুদ্ধে পৃথকভাবে তিনটি নাশকতা মামলা হওয়ায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

জেল থেকে আব্দুস সাত্তার সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়ে জালালাবাদ ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে আমার কাছে পরাজিত প্রার্থী এ্যাড আলী হোসেনসহ কিছু কুচক্রি মহলের ইন্ধনে আমাকে সামাজিক ও রাজনৈকিভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে সাংবাদিকদের নিকট মিথ্যা তথ্য দিয়ে ওই সংবাদ সম্মেলন করেন।

সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে ওই সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ্য করা হয়, আমি তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করছি, অথচ আমি তার বিরুদ্ধে কোন মামলা করি নাই। ৬ শতক জমি নিয়ে বিরোধের কথা উল্লেখ্য করা হয়েছে। ওই জমি আমার ২৭ সালের রেকডীয় মালিকের নিকট থেকে ক্রয়কৃত জমি। যা বর্তমানেও আমার দখলে আছে।

ওই জামায়াত নেতা নাশকতা মামলা থেকে বাঁচার জন্য সংবাদ সম্মেলনে আরো উল্লেখ করেন,তার পিতা ও চাচা এলাকার সর্ব প্রথম স্বাধীনতার লাল-সবুজের পতাকা তোলেন। এটা সম্পর্ণ একটি কাল্পনিক কাহিনী।

আরো উল্লেখ করেছেন, আমি তার ভাইপোদের বাড়ি ছাড়া করেছি বিষয়টি সঠিক নয়, প্রকৃত পক্ষে সাতক্ষীরা জেলার আলোচিত ঘটনা কলারোয়ার লাঙ্গলঝাড়া গ্রামের প্রভাষক খলিলুর রহমানের বাড়িতে গভীর রাতে জানালা দিয়ে ছুড়া পেট্রোল বোমায় দুই সন্তান নিহত ও স্ত্রী আহত হওয়ার ঘটনায় দায়েরকৃত ওই আলোচিত মামলার আসামী হওয়ায় তার ভাইপোরা দীর্ঘদিন ধরে বাড়ি ছাড়া।

শেখ মোসলেম আহমেদ আরো বলেন,ওই আব্দুস সাত্তারকে বিভিন্ন অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে এলাকাবাসি জালালাবাদ পূর্বপাড়া জামে মসজিদ ও খা পাড়া জামে মসজিদ থেকে গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়।

এরপর বর্তমানে পশ্চিমপাড়া মসজিদে মোটা অংকের অনুদান প্রদান করে সাপ্তাহিক ঈমামের দায়িত্ব পালন করছেন। এ ছাড়া তার স্ত্রী রোকেয়া খাতুন ঝরনা জামায়াতের একজন রোকন।

বর্তমানে তার ওষুধের দোকানের কর্মচারী বুইতা গ্রামের আব্দুল জলিলের পুত্র শফিকুল ইসলাম একজন শিবির ক্যাডার। সে জেলার বিভিন্ন উপজেলার জামায়াত-শিবির নেতা কর্মীদের খবরাখবর আদান-প্রদান করে। এমনকি ওই কর্মচারী বোমা তৈরীর একজন প্রশিক্ষক। ওই দোকানে এখনও পর্যন্ত জামায়াত-শিবিরের নেতা কর্মীদের আনাগোনা দেখা যায়।

তাই আমি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উল্লেখিত বিষয়গুলো খতিয়ে দেখার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তার সু-দৃষ্টি কামনা করছি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন আ’লীগের শাতাধিক নেতৃবৃন্দ।