‘কাটআউট’ পদ্ধতিতে হচ্ছে এসএসসির প্রশ্নফাঁস

চলতি এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হচ্ছে ‘কাটআউট’ পদ্ধতিতে। প্রশ্নফাঁসে জড়িতদের এক স্তর চেনে না আরেক স্তরকে। যে কারণে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারা দেশে ৮১ জনকে গ্রেফতার করা হলেও পুলিশ মূল হোতাদের ধরতে পারছে না। ফলে পুলিশি এবং প্রশাসনিক তদন্ত কমিটি অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার উচ্চ আদালত প্রশ্নফাঁসের ঘটনা তদন্তে বিচার বিভাগীয়সহ দুটি কমিটি গঠন করেছেন। একই সঙ্গে ৬ সচিবসহ ২০ জনের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছেন। প্রশ্নফাঁস রোধে আগামী বছর থেকে নতুন পদ্ধতিতে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার এসএসসির রসায়ন পরীক্ষার প্রশ্নও ফাঁস হয়েছে। এ নিয়ে ১১টি বিষয়ের মধ্যে ১০টিরই প্রশ্ন ফাঁস হল।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘এবারের ফাঁসের ধরন দেখে মনে হচ্ছে, সুপরিকল্পিতভাবে কোনো একটি গোষ্ঠী প্রশ্নফাঁস করছে। তাদের লক্ষ্য অর্থ উপার্জন নয়, সরকারকে বিব্রত করা।’ তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যারা ধরা পড়েছে, তাদের কেউ কাউকে চেনে না। মাফিয়া বা জঙ্গিগোষ্ঠীতে সন্ত্রাসী ভর্তির মতো কাটআউট স্টাইলে কাজ হচ্ছে। মাফিয়ায় যেমন একটি স্তর গ্যাপ থাকে (নিচের স্তর ওপরের স্তরের লোক চেনে না), এখানেও সে রকম। এ অবস্থায় আমরা মূলে যেতে পারছি না। গোয়েন্দাদের আন্তরিকতার কোনো অভাব নেই। কিন্তু মূলহোতা পর্যন্ত এখনও পৌঁছতে পারেননি তারা।’ তিনি বলেন, আদালতের আদেশ অক্ষরে অক্ষরে প্রতিপালন করা আমাদের দায়িত্ব।

এদিকে বৃহস্পতিবারের পরীক্ষায় রসায়ন প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে নাটোরে ১০, কুষ্টিয়ায় ১৮ শিক্ষার্থীসহ সারা দেশে ৯৬ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই অপরাধে কুড়িগ্রামের উলিপুরে এক শিক্ষক এবং কিশোরগঞ্জে দুই ও মধুপুরে দুই শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। এদিন সারা দেশ থেকেই নকলবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষকের বিরুদ্ধে নকল সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নকলে সহযোগিতার দায়ে পটুয়াখালীর বাউফলে দুই শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। সেট পরিবর্তন করে নকলের দায়ে পিরোজপুরের নাজিরপুরে ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়। একই দিনে বরিশাল বোর্ডের অধীনে তিন এবং যশোর বোর্ডের অধীনে ৯ শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে। এদিকে চট্টগ্রামে পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষার দিন গ্রেফতার শিক্ষিকাকে একদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।

১ ফেব্রুয়ারি এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষার প্রথমদিন থেকেই প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ আসছে।

কাটআউট পদ্ধতিতে প্রশ্নফাঁস : এ পদ্ধতিতে প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িতরা একজন অপরজনকে চেনে না। শুধু নাম জানে। কে কার মাধ্যমে এ লাইনে এসেছে, তা প্রকাশ করছে না। এরা শুধু এসএসসি নয়, সব ধরনের পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত। যে কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মূলে যেতে পারছে না। তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, এখন পর্যন্ত পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রশ্নফাঁস চক্রের যাদের ধরেছেন তারা ৩য় ও ৪র্থ স্তরের সদস্য। জিজ্ঞাসাবাদে এ পর্যন্ত চারটি স্তরের তথ্য মিলেছে। বেশ কয়েকজনের নাম-পরিচয়ও পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তা বলেন, কে কার কাছ থেকে প্রশ্ন পেয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে তা জানিয়েছে। নামও বলেছে। কিন্তু তাদের মুখোমুখি করার পর একজন অপরজনকে চিনছে না। ঢাকায় গ্রেফতার সুফল ও আল আমিন নামে এমন দু’জন আছে। এরা তিন বছর ধরে প্রশ্নফাঁসের এই ব্যবসায় আছে অথচ পরস্পরকে চিনে না।

গোয়েন্দারা জানান, মূলত জঙ্গি দলে এ কাটআউট পদ্ধতিতে ভর্তির ঘটনা ঘটেছিল। এখানেও সেই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। ফলে গ্রেফতার করলেও মূলহোতারা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তি যেমন ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার, ইমু সহায়ক হিসেবে তারা ব্যবহার করেছে।

পুলিশের একটি সূত্র বলছে, হাতের লেখা প্রশ্ন বা ছাপানো দুই সেট প্রশ্নই ফাঁস হচ্ছে। তাই প্রশ্নফাঁসের হোতা চিহ্নিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সন্দেহে রেখে তদন্ত চলছে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার শেখ নাজমুল আলম বলেন, প্রশ্নফাঁস চক্রের সদস্যরা এক গ্রুপ অন্য গ্রুপ সম্পর্কে কিছুই জানে না। এ কারণে জড়িত মূলহোতাদের আইনের আওতায় আনতে বেগ পেতে হচ্ছে। তবে প্রশ্নফাঁস বন্ধে ডিবি মূলহোতাদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ৪ ফেব্রুয়ারি প্রশ্নফাঁসের ঘটনা তদন্তে কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরের নেতৃত্বে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটি এ পর্যন্ত একটি বৈঠক করেছে। রোববার বিকাল ৪টায় ফের বসবে কমিটি। তদন্ত প্রসঙ্গে কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব যুগান্তরকে বলেন, ‘প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত মূল অপরাধীকে ধরা যাচ্ছে না। যারা ধরা পড়েছে তাদের একজন আরেকজনকে চেনে না।’

হাইকোর্টের দুই কমিটি : প্রশ্নফাঁসের ঘটনা তদন্তে বৃহস্পতিবার দুটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। ঢাকা জেলা ও দায়রা জজের নেতৃত্বে বিচারিক তদন্ত কমিটি এবং বুয়েটের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের নেতৃত্বে প্রশাসনিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ দুই কমিটির সদস্য সংখ্যা হবে পাঁচজন করে। এছাড়া প্রশ্নফাঁস রোধে সরকারের নিষ্ক্রিদ্ধয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।

একটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মনিরুজ্জামান ।

আদালতের আদেশের কপি পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে কমিটিকে কাজ শুরু করতে এবং পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। শিক্ষা, আইন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা, স্বরাষ্ট্র, তথ্যপ্রযুক্তি সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যান, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ৯টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ২০ বিবাদীকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদেশের পর রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, বিচারিক কমিটির কাজ হবে কারা জড়িত, কীভাবে প্রশ্ন ফাঁস হচ্ছে, কার মাধ্যমে হচ্ছে, কোন মাধ্যমে ফাঁস হচ্ছে, তা শনাক্ত করবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থাকলে সেটা বা কীভাবে নেয়া উচিত, সে বিষয়ে সুপারিশ করবে।

ঢাকা জেলা ও দায়রা জজের নেতৃত্বে কমিটিতে থাকবেন নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আইন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন করে ডেপুটি সেক্রেটারি। বুয়েটের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদের নেতৃত্বে প্রশাসনিক কমিটিতে থাকবেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সোহেল রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক, কম্পিউটার সোসাইটির একজন তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এবং সিআইডির ডিআইজি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা। জ্যোতির্ময় বড়ুয়া জানান, শুনানিতে আদালত বলেছেন, মাদকের মতো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে প্রশ্নপত্র ফাঁস। মাদক যেভাবে তরুণ সমাজকে ধ্বংস করছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসও তেমনি দেশের তরুণদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করছে। এ সময় আদালত নীরব দর্শকের মতো বসে থাকতে পারে না। এর আগে এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের ঘটনার প্রেক্ষাপটে পরীক্ষা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী আইনুর নাহার সিদ্দিকা, শিকদার মাহমুদুল রাজি, মোহাম্মদ রাজু মিয়া ও আইনজীবী নূর মুহাম্মদ আজমী।

সচিবের মুখে অসহায়ত্ব : হাইকোর্টের আদেশ ও রুলনিশি জারির পর শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, আদালতের আদেশ প্রতিপালন করা আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য। আমরা আদেশ হাতে পাওয়ার পর দ্রুত ব্যবস্থা নেব। এরই মধ্যে আদেশ সংগ্রহের জন্য আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

সাংবাদিকদের কাছে প্রশ্নফাঁস রোধে নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে শিক্ষা সচিব অনেকটা অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। আসলে পরীক্ষা গ্রহণের সঙ্গে নানা বিভাগ ও মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে প্রশ্নফাঁসমুক্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠান সম্ভব নয়।’ তিনি বলেন, ‘প্রশ্ন আগেও ফাঁস হতো। কিন্তু তা এতটা ছড়াত না। এখন তা বিস্তৃত হচ্ছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে। যদি ইন্টারনেট না থাকত, তবে ফাঁস হলেও এত বড় সর্বনাশ হতো না। সেটি সীমিত হতো, কেউ জানতেই পারত না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি বারবার বলছি যে বাস্তবতা হচ্ছে, এখানে ৩০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী সংশ্লিষ্ট। ৩০ হাজারের মধ্যে আমি মনে করি, বেশিরভাগই অনেস্ট ও সিনসিয়ার। কিন্তু দু-চার-দশজনও যদি এই জঘন্য অপকর্মটি করেন, তাদের জন্য প্রত্যেকের সততা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে। কারও সততার কোনো মূল্য থাকছে না।’

তিনি বলেন, বর্তমানে যে পদ্ধতিতে পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন তৈরি, ছাপা ও সরবরাহ হয়, তাতে ফাঁস রোধ করা যাবে- এমন নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারবে না। এক মাস পর যে এইচএসসি পরীক্ষা হবে, তার প্রশ্নও যে ফাঁস হবে না, সে নিশ্চয়তা দেয়ার মতো অবস্থায় আমরা নেই। তাই সবার মতামত নিয়ে নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবনের চেষ্টা চলছে। আগামী বছর থেকেই নতুন পদ্ধতিতে এসএসসি পরীক্ষা নেয়া হতে পারে। তিনি বলেন, প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে প্রতি উপজেলায় একটির বেশি কেন্দ্র না রাখা, প্রয়োজনে এমসিকিউ পদ্ধতি তুলে দেয়ার চিন্তাভাবনা করা যায়। তবে এসব সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্টজনদের মতামত নেয়া হবে। এ সময় তিনি প্রশ্নফাঁসের জন্য মানুষের নৈতিক অবক্ষয়কেও দায়ী করেন। সোহরাব হোসাইন বলেন, প্রশ্নফাঁস প্রতিরোধে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আপ্রাণ চেষ্টা করছে। পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবেও তিনি উপায় খুঁজছেন। কিছু একটা উপায় বের করা হয়েছে। সেটা মন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করা হবে। এরপর এ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে। তাদের সঙ্গে বসে নতুন কোনো পথ বের হলেই পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস রোধ করা সম্ভব। তবে তিনি স্বীকার করেন, কেন্দ্রে প্রশ্ন ছাপিয়ে পরীক্ষা নেয়ার ব্যাপারে ইতিপূর্বের প্রস্তাব উপযুক্ত নয়। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, পরিকল্পনা থাকলেও সারা দেশে ইন্টারনেট সংযোগ না থাকায় প্রশ্ন না ছাপিয়ে সকাল ১০টায় সব কেন্দ্রের স্ক্রিনে একযোগে সরবরাহ করা সম্ভব হবে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রশ্নফাঁস হলে পরীক্ষা বাতিল করার কথা আমি বলেছি। এ বিষয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।-যুগান্তর